দর্শনা মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাতদলের হানা

কর্তৃপক্ষ রোগ ও স্বজনদের কাছে নগদ টাকা সোনার গনাসহ ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট

 

দর্শনা অফিস: দর্শনা মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে সশস্ত্র মুখোশধারী ডাকাতেরা হানা দিয়ে অস্ত্রের মুখে হাসপাতালের স্টাফ, রোগী ও রোগীদের স্বজনদের কাছ থেকে লুট করেছে নগদ টাকা, সোনার গয়না ও মোবাইলফোনসহ ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল। পিটিয়ে আহত করেছে হাসপাতালের স্টাফ জোচনা ও মনিরাকে। হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের দফায় দফায় বৈঠক। শেষ পর্যন্ত মামলা দায়ের করা হয়নি।

জানা গেছে, কেরুজ চিনিকলের আখচাষি কল্যাণ সংস্থার অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত হয় দর্শনা-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়ক সংলগ্ন সিঅ্যান্ডবিপাড়ায় মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালটি সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নের কারণে রোগীর সংখ্যা দিনদিন বাড়তে থাকে হাসপাতালটিতে। গতপরশু শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ১২/১৩ জনের সশস্ত্র মুখোশধারী ডাকাতদল হাসপাতাল ভবনের পাঁচিল টপকে ছাদে ওঠে। ডাকাতেরা ছাদের সিঁড়িঘর দিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করে। ক্লিনিকের ২টি ওয়ার্ড, ও বেশ কয়েকটি কেবিনের রোগী ও রোগীর স্বজনদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চালায় লুটপাট। রোগীদের মধ্যে দর্শনা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল কবিরের মা আলেয়া খাতুন, ভাইজি টুম্পা ও জামাতা মানিকের কাছ থেকে নগদ প্রায় ১০ হাজার টাকা, দু ভরি ওজনের সোনার গয়না, ৩টি মোবাইলফোন, জীবননগরের সেনেরহুদার সাইদুরের স্ত্রী কাকলীর কাছ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা, সোনার গানের দুল, দামুড়হুদার ডুগডুগির বলাই ঘোষের স্ত্রী সুচরিতা ঘোষের কাছ থেকে সোনার গানের দুল, মোবাইলফোন, দর্শনা ঈশ্বরচন্দ্রপুরের আছের আলীর স্ত্রী আশিনুরের কাছ থেকে একটি মোবাইলফোন, মাখালডাঙ্গার আশরাফুলের স্ত্রী আমেনার কাছ থেকে নগদ ৫ হাজার টাকা, মোবাইলফোন ও সোনার কানের দুল, দর্শনা বাসস্ট্যান্ডপাড়ার রবিউলের স্ত্রী ফাতেমার কাছ থেকে নগদ ৩ হাজার টাকা, মোবাইল ও সোনার কানের দুল হাসপাতালের স্টাফ জোচনা ও মনিরার কাছ থেকে মোবাইলফোনসহ বেশ কয়েকজনের নগদ টাকা, সোনার গয়না এবং মোবাইলফোন লুট করেছে ডাকাতেরা। ডাকাতেরা মনিরা ও জোচনাকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। মুখোশধারী ডাকাতেরা হাসপাতালের পাহারাদার ঈশ্বরচন্দ্রপুরের আবুল মিয়ার কাছ থেকে অস্ত্রের মুখে বিভিন্ন কক্ষের ও প্রধান ফটকের চাবি ছিনিয়ে নেয় বলেও করা হয়েছে অভিযোগ। ডাকাতদল টানা দেড়ঘণ্টা লুটপাট তাণ্ডব চালিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে রোগী ও রোগীদের স্বজনেরা।

হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের ওমর আলী অভিযোগ করে বলেছেন, ঘটনার পরপরই পুলিশকে মোবাইলফোনে জানানো হলেও সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দর্শনা টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। দর্শনা আইসি ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান বলেছেন, ডাকাতদলের সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য শুরু হয়েছে অভিযান। বিস্তার করা হয়েছে জাল। এ ঘটনায় গোটা এলাকায় ডাকাতি আতঙ্ক বিরাজ করছে। হাসপাতালে ডাকাতি ঘটনার পর হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের কয়েক দফায় বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে থানায় ডাকাতি মামলা ও পাহারাদারের চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত কোনোটি কার্যকরী হয়নি বলে জানা গেছে। সকাল ১০টার দিকে দামুড়হুদা থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

Leave a comment