হরতাল অবরোধে চরম দুশ্চিন্তায় ১৫ লাখ পরীক্ষার্থী

স্টাফ রিপোর্টার: রাজনৈতিক অস্থিরতা এসএসসি ও সমমানের প্রায় ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীকে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাদের সাথে অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধ কর্মসূচির কারণে পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বিঘ্ন ঘটছে। অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। পরীক্ষা যথাসময়ে ও নির্বিঘ্নে দেয়া যাবে কি-না, তা নিয়েও ব্যাপক অনিশ্চয়তা কাজ করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে।

এদিকে পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে এবং প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে আট দফা নির্দেশনা পাঠিয়েছেন শিক্ষাসচিব। নির্দেশনায় প্রশ্নফাঁসের সাথে কেউ জড়িত থাকলে কিংবা ফাঁসকৃত প্রশ্ন বহন করলে তার তাৎক্ষণিক বিচারের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি-ভোকেশনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। অবরোধ কর্মসূচির কারণে পরীক্ষা পেছানোর চিন্তাভাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। গত বছর ১০টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মোট ১৪ লাখ ৩২ হাজার ৭২৭ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। এ বছর প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীর অংশ নেয়ার কথা। গতবার পরীক্ষা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হলেও এর আগের বছর (২০১৩ সালে) বিরোধী দলের কর্মসূচির কারণে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছিলো। সেবার পাঁচ দিন পরীক্ষা পেছাতে হয়েছিলো। অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কি-না- জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষা-ক্যালেন্ডার অনুসারে কয়েক বছর ধরে নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল ঘোষণা করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে ভর্তি পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি বলেন, পরীক্ষা পেছানোর সুযোগ নেই।

নির্বিঘ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠানে সব মহলের সহযোগিতা চেয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার্থীরা কেবল আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান নয়, তারা দেশের সন্তান, দেশের ভবিষ্যত। আশা করি, ভবিষ্যত প্রজন্মের অগ্রযাত্রায় বিরূপ প্রভাব পড়ে, এমন কর্মসূচি থেকে রাজনৈতিক দলগুলো বিরত থাকবে। তিনি পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্য বিএনপির প্রতি অনুরোধ জানান। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে সব পরীক্ষার্থী নিরাপদে আসা-যাওয়া করতে পারবে কি-না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সবার মধ্যেই টেনশন কাজ করছে।

শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) কাছে পাঠানো নির্দেশনায় এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছেন। প্রশ্নফাঁসের কোনো ঘটনা নজরে এলে ১৯৮০ সালের পরীক্ষা আইনে এবং ২০০৬ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। গত জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার সময় এ রকম নির্দেশনার ভিত্তিতে ফাঁসকৃত প্রশ্ন বহনের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচারের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো।