স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় নার্সিং ইনস্টিটিউটের ৩৭ জনের ছাত্রীত্ব বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার তাদের সমস্ত দেনা-পাওনা চুকিয়ে বিদায় দেয়া হয়। ভর্তি বাতিল ছাত্রীরা কী করবে ভেবে পাচ্ছে না। তাদের চোখে-মুখে শুধু অন্ধকার। অনেকে অনার্স পড়া বাদ রেখে এখানে নার্সিঙে ভর্তি হয়েছিলো। শিক্ষাজীবনের এই হোঁচট খাওয়া মেনে নিতে পারছে না অনেকেই। এদের মধ্যে অনেকেই দাবি করছে, তারা যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই নার্সিঙে ভর্তির আবেদন করেছিলো। চুয়াডাঙ্গায় ৪৯ জনের মধ্যে ৩৮ জন ছাত্রীর ভর্তিতে জালিয়াতি ধরা পড়ে। এর মধ্যে প্রত্যেকের বিপরীতে নতুন করে ভর্তির সুযোগ পাওয়াদের নাম ঠিকানা পাঠিয়েছে সেবা পরিদফতর। তবে নওগাঁ জেলার নুরুল ইসলামের মেয়ে নাসিমা খাতুনের বিপরীতে কারো নাম ঠিকানা না থাকায় আপাতত তাকে চুয়াডাঙ্গায় এনটিসিতে রাখা হয়েছে। তার ছাত্রীত্ব বাতিল করা হয়নি।
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সাইন্স অ্যান্ড মিডউইফারি তিন বছর মেয়াদী এ কোর্সে ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে গত নভেম্বরে ৫০ আসনের বিপরীতে ৪৯ জন ছাত্রী চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়। গতপরশু রোববার সেবা পরিদফতরের একটি চিঠি চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটে তোলপাড় সৃষ্টি করে। কান্নায় ভেঙে পড়ে ৩৮ জন ছাত্রী। দু ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩৮ জন ছাত্রীর ভর্তিতে জালিয়াতি ধরা পড়ে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় ওই চিঠিতে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে ৩৭ জন ছাত্রীর ভর্তি বাতিল করা হয়। ভর্তি বাতিল হওয়া ৩৭ ছাত্রী হলো- রূপালী খাতুন, মিতু খাতুন, কানিজ ফাতেমা, স্বপ্না খাতুন, মিষ্টি বিশ্বাস, লাভলী খাতুন, সুবর্ণা বিশ্বাস, ইশিতা রাণী বিশ্বাস, অনিকা খাতুন, সোনালী খাতুন, নাসরিন খাতুন, স্বপ্না খাতুন, শামিমা আক্তার শিখা, সীমা বিশ্বাস, সুইটি আক্তার, মিনি খাতুন, তিথী বিশ্বাস, তানিয়া খাতুন, বিভা পারভীন, খাদিজা পারভীন, আয়েশা আক্তার, স্মৃতি খাতুন, খাদিজা পারভীন, খুরশিদা খাতুন, কুমারী সবিতা দেবী, শারমিন জাহান, স্বপ্না খাতুন, রুবিনা খাতুন, চৈতী সরকার, মর্জিনা খাতুন, রেশমা খাতুন, মোমিনা খাতুন, মুক্তি খাতুন, জোয়েনা সুইট, হোসনে আরা খাতুন ও আসমা উল হুসনা।
নার্সিং ইনচার্জ আলোমতি বেগম বলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই অভিযুক্ত ছাত্রীদের ছাত্রীত্ব বাতিল করা হয়েছে। তারা হল ছাড়তে শুরু করেছে। অনেকেই অবরোধ ও হরতালের কারণে হল ছাড়তে পারছে না।
অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী একটি চক্র নার্সিঙে ভর্তি জালিয়াতির সাথে জড়িত রয়েছে। তারা কম পয়েন্টে ভর্তির সুযোগ করে দিয়ে লাখ লাখ টাকার অর্থবাণিজ্য করছে। এখন তার খেসারত দিচ্ছে সাধারণ ছাত্রীরা।