স্টাফ রিপোর্টার: চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপির ধর্ষণ মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোহাম্মদ রুবেল হোসেনের জামিন আবেদন নাকচ করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষের আইনজীবীদের দীর্ঘ শুনানি শেষে জামিন নাকচের ওই আদেশ দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাত। এর আগে সকালে ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন জাতীয় দলের এ ক্রিকেটার। জামিন শুনানিতে আসামিপক্ষে অংশ নেন ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ ও অ্যাডভোকেট মাহবুব আলমসহ অন্য আইনজীবীরা। ওই আইনজীবীরা নানাভাবে জাতীয় দলে ক্রিকেটার রুবেলের অপরিহার্যতার বিষয়টি বিচারককে বোঝানোর চেষ্টা করেন।
অপরদিকে বাদীর পক্ষে প্রথমে শুনানি করেন পুলিশের সহকারী কমিশনার মিরাশ উদ্দিন। তিনি এই মামলার সাথে সংশ্লিষ্ট ফৌজদারী কার্যবিধি, নারী ও শিশু নির্যাতন আইন এবং পিআরবি (পুলিশ প্রবিধান)’র বিভিন্ন ধারা-উপধারা ও বিধি-বিধান এবং সেই আলোকে আসামি রুবেলের জামিন নামঞ্জুরের প্রার্থনা জানিয়ে অনুপুঙ্খ বক্তব্য দেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তার জন্য বাদী হ্যাপির নিয়োজিত আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মনসুর রীপন, অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদার জামিন নামঞ্জুরের বিষয়ে শুনানি করেন। শুনানিকালে অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মনসুর রীপন বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সংবিধান স্বীকৃত নাগরিকদের মৌলিক ও মানবাধিকার বিষয়, উচ্চ আদালতের বিভিন্ন নজির, এ ধরনের অপরাধে জামিন দেয়ার নেতিবাচক পরিণতির কথা সবিস্তারে তুলে ধরেন। তার এমন বক্তব্য উপস্থিত সকল আইনজীবী, আদালতের কর্মচারী, অন্যান্য মামলার বিচার প্রার্থী ও উৎসুক লোকজন উপভোগ করেন। এরপর শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহজামান হাওলাদার তুহিন। এ দু আইনজীবীর আইনগত ও যুক্তিপূর্ণ বক্তব্যে আসামিপক্ষের জামিনের আবেদন অনেকটা ফিকে হয়ে যায়। অবশেষে বিচারক উন্মুক্ত আদালতে আসামি রুবেলের জামিনের আবেদন অগ্রাহ্য করে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। এর আগে গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকা রুবেল ঢাকার সিএমএম আদালতে জামিননামা দাখিল করেন। ওইদিন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আশিকুর রহমানের আদালতে জামিননামা দাখিলের অনুমতি চেয়ে একটি আবেদন করেন। গত ১৫ ডিসেম্বর এ মামলায় হাইকোর্ট তাকে চার সপ্তার জামিন দেন।
এ সময়ের মধ্যে তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেয়া হয় ওই আদেশে। উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর নবাগত অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি ধর্ষণের অভিযোগ এনে রাজধানীর মিরপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯/১ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রুবেল তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। মামলা দায়েরের পর রাত সাড়ে ৭টার দিকে নায়িকা হ্যাপিকে পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নেয়া হয়। পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেন্সি বিভাগে তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। কিন্তু কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। এ পরিস্থিতিতে বিসিবি রুবেলের বিকল্প শফিউল হতে পারে ধারনা করা হচ্ছে।