বাংলাদেশের ১২শ গজ অভ্যন্তরে বি
জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার হরিহরনগর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে বাংলাদেশি যুবক মশিয়ার রহমান (৩৬) নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ভারতের পুটিখালী বিশেষ ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশের ১২শ গজ অভ্যন্তরে মেদিনীপুর সীমান্তের হরিহরনগরে প্রবেশ করে বাংলাদেশি এ যুবককে গুলি করে খুন করে। ভারতের ভাজনঘাট ফার্মের মাঠের সন্নিকটে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মশিয়ারের লাশ এলাকাবাসী উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। ১২শ গজ অভ্যন্তরে অবৈধভাবে প্রবেশ করে মশিয়ারকে হত্যা করায় এলাকাবাসী এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
গ্রামবাসী ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হরিহরনগর গ্রামের নতুন মসজিদপাড়ার আব্দুর রশিদের ছেলে মশিয়ার রহমান বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ভাতিজা ইয়াসিনকে (১০) সাথে নিয়ে ভারতের ভাজনঘাট ফার্মের সন্নিকটে ৬২/৯-এস পিলারের নিকট থেকে বাংলাদেশের ১২শ গজ অভ্যন্তরের জমিতে ঘাস কাটতে যান। এ সময় ভাতিজা ইয়াসিন খেলতে-খেলতে ভারত সীমানায় চলে গেলে ভারতের ১৭৩ ব্যাটালিয়নের পুটিখালী ক্যাম্পের বিএসএফ’র টহলদল তাকে ধরে নির্যাতন শুরু করে। ভাতিজার চিৎকার শুনে মশিয়ার ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং এ নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফ’র নিকট থেকে তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টাকালে বিএসএফ’র সাথে তার ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে মশিয়ার ভাতিজাকে নিয়ে চলে আসে। এ সময় বিনা উসকানিতে বিএসএফ তারকাটা পার হয়ে বাংলাদেশের ১২শ গজ অভ্যন্তরে প্রবেশ করে মশিয়ারের ওপর গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় সেখানে কর্মরত কৃষক রবিউল মণ্ডলের ছেলে জামাল (২৮), নজু বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল আজিজ (২৫) ও নজু বিশ্বাসসহ এলাকাবাসী গুলির আওয়াজ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে নিহত মশিয়ারের লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। এ ঘটনায় আরো দুজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ সময় বিএসএফ ইয়াসিনের ছোট বাইসাইকেলটি নিয়ে যায় বলে অভিযাগ করা হয়েছে। মর্মান্তিক এ নিহতের ঘটনায় তার পরিবারের শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত মশিয়ারের দু ছেলে। এর মধ্যে বড় আল কাইদ (৮)। সে প্রথম শ্রেণির ছাত্র ও ছোট ছেলে আল কাইমের বয়স ৬ বছর। তাদের নিয়ে স্ত্রী শরিফা খাতুন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল এসএম মনিরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের নিকট ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি দেখার জন্য ব্যাটালিয়নের উপঅধিনায়ক মেজর আনোয়ার জাহিদকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। সন্ধ্যা ৬টায় এ হত্যার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাতে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে পত্র দেয়া হয়েছে।