আলমডাঙ্গার স্কুলছাত্রী তাহেরা হত্যা মামলার বাদীর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

এজাহার পুলিশের পছন্দে : তদন্তেও নেই অগ্রগতি

 

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার স্কুলছাত্রী তাহেরা হত্যা রহস্য উন্মোচনে পুলিশি তদন্তে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না মামলার বাদী তাহেরার পিতা শাজাহান আলী। তিনি ক্ষোভের আগুনে পুড়ছেন। বলেছেন, যেভাবে মামলা করতে গেলাম, পুলিশ সেভাবে নিলো না। বাড়ির মালিকের ছেলে মাসুদ রানা বাচ্চুর অবস্থান জেনে পুলিশকে তথ্য দেয়ার পরও কোনো কাজ হলো না। ঘটনার সময় যারা বাড়িতে ছিলো তাদেরও তেমন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না। অথচ ঘটনা ঘটেছে দীর্ঘ সময় ধরে। বাড়িতে উপস্থিত কেউ ঘটনা টের পায়নি তা বিশ্বাস করবো কীভাবে?

আলমডাঙ্গা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী তাহেরা খাতুন ছিলো এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। লেখাপড়া নিয়েই ব্যস্ত থাকতো সে। গত ৯ ডিসেম্বর দুপুরে একা ঘরে বসে পড়ছিলো। এ সময় তার ঘরে ঢুকে ঘাতকদল ধর্ষণ শেষে হত্যা করে। হত্যার পর লাশের ওপরও চালায় পাশবিক নির্যাতন। হাতে লিখে দেয় আই লাইভ ইউ। ধারালো কিছু দিয়ে বুক চিরে দেয়। লাশ উদ্ধারের পর বাড়ির মালিক আব্দুল কাদেরসহ তার ছেলে বাচ্চুর আচরনে স্থানীয়দের সন্দেহ দানা বাধলেও পুলিশ সেদিকে বিশেষ নজর দেয়নি। স্থানীয়রা এ অভিযোগ করে বলেছে, ঘটনার সপ্তা পার। অথচ হত্যা রহস্য উন্মোচনে পুলিশি তদন্তে তেমন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। শুধু মাত্র প্রাইভেট টিউটর রাশেদকে ধরে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যার সাথে প্রাইভেট টিউটর রাশেদ জড়িত বলে পুলিশ দাবি করলেও মামলার বাদী তথা নিহত তাহেরার পিতার ঘোরতোর সন্দেহ হত্যাকাণ্ড ওই বাড়ির মালিক বাচ্চুসহ তার বন্ধুরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সে কারণেই তিনি বাচ্চুসহ ঘটনার সময় বাড়িতে উপস্থিত ব্যাক্তিদের নাম ধাম এজাহারে উল্লেখ করতে চেয়েছিলেন। গতপরশু মামলার বাদী শাজাহান আলী ক্ষোভের সাথে এ মন্তব্য করে বলেন, আমি যে এজাহার লিখে থানায় নিয়ে গেলাম। সেই এজাহার থানার ওসি বাদ দিয়ে নিজেরা লিখে দিয়ে তাতে স্বাক্ষর করতে বললেন। পুলিশের কথা মতো তাতেই স্বাক্ষর দিতে হলো।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার ছত্রপাড়ার শাজাহান আলী দু মেয়ে। তাহেরা ছিলো বড় মেয়ে। মেয়ের লেখাপাড়াস পারিবারিক কারণে শাজাহান সপরিবারে আলমডাঙ্গার আনন্দধামপাড়ার আব্দুল কাদেরের দোতালাবাড়ির নিচ তলার দুটি ঘর ভাড়ায় নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। গত ৯ ডিসেম্বর গ্রামের বাড়ি যান শাজাহান ও তার স্ত্রীসহ ছোট মেয়ে। তাহেরার কাছে রেখে যান তার নানিকে। নানি আলমডাঙ্গারই অপর এক মেয়ের বাড়ি গেলে তাহেরা একাই ঘরে থাকেন। এ সময় তাকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে লাশের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। গলায় রশি দিয়ে গিট বেধে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। লাশ উদ্ধার হয়। রোমহর্ষক হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে ঘটনার পরদিন থেকে সহপাঠী, শিক্ষকসহ এলাকার সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামেন। ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচিও পালন করা হয়। বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল বাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়।