মহান বিজয় দিবস আজ

 স্টাফ রিপোর্টার: আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। স্বাধীনতা যুদ্ধপর্বের অবিস্মরণীয় একটি দিন। লাখো শহীদের রক্তস্নাত বিজয়ের দিন। বিশ্বের মানচিত্রে নতুন স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ৪৩ বছর পূর্তি আজ। পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ, নিপীড়ন আর দুঃশাসনের কুহেলিকা ভেদ করে ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে বিজয়ের প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝিকমিক করে উঠেছিল বাংলাদেশের শিশির ভেজা মাটি। অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের কৃষ্ণ অধ্যায়।

10849966_810241635688146_5272798536601521655_n

চুয়াডাঙ্গায় আজ সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানা চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা করা হবে। সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও রঙিন পতাকা দিয়ে সাজানো হবে। সকাল সাড়ে ৬টায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি-আধাসরকারি স্বায়ত্তশাসিত বেসরকারি ভবনে সঠিক মাপ ও রঙের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৮টায় চুয়াডাঙ্গা স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক কর্তৃক জাতীয় সঙ্গীতের সাথে সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। তার পরপরই পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, বিএনসিসি, গার্লস গাইড, স্কাউট, শিশু পরিবার  নিবাসী ছাত্রছাত্রী, মুকুল ফৌজ, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, ক্লাবের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করবেন। সকাল সাড়ে ১০টায় ভি.জে স্কুল মাঠে (চাঁদমারি মাঠ) শুটিং প্রতিযোগিতা, বেলা ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মুক্তমঞ্চে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, বেলা ১২টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণে শিশুদের সঙ্গীত, নৃত্য ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত পান্না মুভিজে মেয়েদের জন্য ও নান্টুরাজ সিনেমা হলে ছেলেদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে। সুবিধামতো সময়ে হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার, অন্ধ স্কুল, ভবভব ঘুরে আশ্রয়কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বাদ জোহর সকল মসজিদে জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হবে। সুবিধামতো সময়ে সকল মন্দির, গির্জা প্যাগোডায় জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে প্রার্থনা করা হবে। বেলা আড়াইটায় চুয়াডাঙ্গা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের রশি টানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা স্টেডিয়ামে সাবেক খেলোয়াড় একাদশ বনাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা একাদশ, মুক্তিযোদ্ধা একাদশ বনাম সোনালি অতীত একাদশ ও জেলা প্রশাসন একাদশ বনাম পৌরসভা একাদশের নিয়ে প্রীতি ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছে। একই সময়ে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মহিলাদের আলোচনাসভা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় চুয়াডাঙ্গা হাটকালুগঞ্জের কেরু অ্যান্ড কোম্পানির সাবজোন মাঠে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী করা হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মুক্ত মঞ্চে সুখি, সমৃদ্ধি, ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার এবং মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এদিকে গতকাল রোববার সকাল ৭টায় দর্শনা রেলগেট থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পর্যন্ত ম্যারাথন দৌঁড়ের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১টায় পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর শাস্তির রায় দায়মোচনের যাত্রা শুরু হওয়ায় এবার স্বস্তি ও প্রশান্তির হাসি এবং রক্তের ঋণ শোধ করার গর্ব নিয়ে দেশবাসী বিজয় দিবস পালন করছে। কারাগারের ফাঁসির সেলে মৃত্যুর দিন গুনছে কয়েকজন রাজাকার শিরোমনি। এসব দেশদ্রোহীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিলো সেটির উদয় ঘটে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। ৯১ হাজার ৫৪৯ পাকিস্তানি সৈন্য প্রকাশ্যে আত্মসমর্পণ করেছিলো। ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী মিত্র বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের সর্বাধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিত্ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেছিলেন। দেন-দরবার নয়, কারও দয়ার দানে নয়, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের পর নত মস্তকে পাকিস্তানি বাহিনী পরাজয় মেনে নেয়। পৃথিবীতে নতুন একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। আর এ বিজয়ের মহানায়ক হিসাবে যিনি ইতিহাসে চির অম্লান ও ভাস্বর হয়ে আছেন তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আনন্দ অনেকভাবেই আসতে পারে জীবনে। কিন্তু মাতৃভূমির পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য প্রাণ উত্সর্গ করা যুদ্ধজয়ের আনন্দের কোনো তুলনা হয় না। মুক্তিপাগল বাঙালি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে এনেছিলো। যে সূর্য কিরণে লেগেছিলো রক্ত দিয়ে অর্জিত বিজয়ের রং। সেই রক্তের রং সবুজ বাংলায় মিশে তৈরি করেছিলো লাল সবুজ পতাকা। সেদিনের সেই সূর্যের আলোয় ছিল নতুন দিনের স্বপ্ন, যে স্বপ্ন অর্জনে অকাতরে প্রাণ দিয়েছিলো এ দেশের ৩০ লাখ মানুষ। নয় মাসের জঠর-যন্ত্রণা শেষে এদিন জন্ম নেয় একটি নতুন দেশ, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

বস্তুত বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাহেন্দ্রক্ষণ একদিনে আসেনি। এর পেছনে রয়েছে এ জাতির ঘাম ঝরানো সংগ্রাম। সেই সংগ্রামের মহান সেনাপতি হিসেবে কাউকে বিবেচনা করতে গেলেই উচ্চারিত হবে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু মানেই আমাদের নতুন অস্তিত্ব। ৫৫ হাজার বর্গমাইল জুড়েই তার অস্তিত্ব বিদ্যমান।

ঔপনিবেশিক ইংরেজ শাসনামলে বাঙালি রক্ত দিয়েছে। লড়াই করেছে শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে। সোয়া ২শ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংগ্রাম ও লড়াইয়ে রক্ত দিয়েছে এই বাঙালি জাতি। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পেছনেও ছিলো বাঙালিদের অবদান। বাঙালিরাই ছিলো পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল কারিগর। কিন্তু কয়েক বছরেই বাঙালির মোহভঙ্গ হয়। যে শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে তারা ইংরেজদের বিতাড়িত করেছিলো সেই একই রকম শোষণ বঞ্চনার মুখোমুখি হয়ে পড়ে কয়েক বছরের মধ্যেই। শুরু হয় সংগ্রামের নতুন যুগ। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সর্বক্ষেত্রেই তারা বঞ্চিত করতো বাঙালিদের। এমনকি নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতেও তারা অস্বীকার করতো। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান এসবই ইতিহাসের বাঁক ঘুরিয়ে দেয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচন সব পরিণতিকে দিয়ে দেয় চূড়ান্ত রূপ। শুরু হয় নতুন অধ্যায়। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে আসে বঙ্গবন্ধুর বজ্র নিনাদ ঘোষণা এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। এ ঘোষণা জাতির মনে বয়ে আনে অন্য এক প্রেরণা, জাগিয়ে তোলে মুক্তির উন্মাদনা।

মহান বিজয় দিবস পালনে আজ নতুন সাজে সেজেছে বাংলাদেশ। সারাদেশ ছেয়ে গেছে লাল-সবুজ পতাকায়। আজ প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের সূচনা হবে। আজ সরকারি ছুটির দিন। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে নামবে শহীদদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ জনতার ঢল। বীর শহীদদের মহান ত্যাগের কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞ জাতি শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন। দেশব্যাপি আজ বিভিন্ন ভবনের ছাদে পতপত করে উড়বে লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি: বিজয় দিবসের বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ বছর বিজয়ের ৪৩ বছর পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে। এদেশের মানুষ শান্তিকামী, গণতন্ত্রকামী। দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে অবদান রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

প্রধানমন্ত্রী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার আহবান জানিয়ে বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, শান্তিপূর্ণ মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে তার সরকার কাজ করছে। দেশ সেবায় আত্মনিয়োগ করাই হোক এবারের বিজয় দিবসে আমাদের অঙ্গীকার। তিনি আশা প্রকাশ করেন রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে সক্ষম হব।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি দীর্ঘ তেইশ বছর রাজনৈতিক সংগ্রাম ও নয় মাস মরণপণ যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। বাঙালি জাতির অনন্য গৌরবের দিন আজ।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তূপ থেকে টেনে তুলে সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের জঘন্য হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে তারা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়।

বিরোধী দলীয় নেতা: বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ তার বাণীতে বলেন,  বিজয় দিবস বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে আনন্দের ও গৌরবের দিন। লক্ষ শহীদের আত্মাহুতি ও দীর্ঘ ৯ মাসের সংগ্রামের ফলে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা, পেয়েছি প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধাদের অপরিসীম ত্যাগ ও বীরত্বগাথা চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

খালেদা জিয়া: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার বাণীতে বলেন, শোষণ-বঞ্চনামুক্ত একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়েই ১৯৭১ এদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে আমাদের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, জনগণের মৌলিক ও মানবিক অধিকার খর্ব হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই এদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে। তিনি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

জাতীয় পার্টি (জেপি): জেপির চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি এবং মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম দেশবাসীকে মহান বিজয় দিবসের  শুভেচ্ছা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ১৯৭১ সনের এ দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম সাহসী লড়াই এবং দেশবাসী জনগণের ত্যাগ ও তিতীক্ষার বিনিময়ে আমরা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে দেশ মাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করতে পেরেছিলাম। সেদিনের সেই ঐক্যের চেতনাকে নতুন করে আমাদের নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে হবে এবং আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে নিরঙ্কুষ করতে হবে।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, আমরা এ মুহূর্তে বিনম্র শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে; যার  নেতৃত্বে বাঙালি জাতি হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে মুক্ত হতে পেরেছে। একই সাথে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী ভারতীয় সেনাবাহিনীর যারা নিহত হয়েছিলেন, তাদের অবদানও কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। আমাদের মুক্তিসংগ্রামে সেদিন ভারত, সোভিয়েত ইউনিয়নসহ যে সমস্ত রাষ্ট্র ও সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ যে সকল দেশের জনগণ আমাদের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছিলেন, তাদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। নেতৃদ্বয় বলেন, যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে শরীক হয়েছিলাম এখনও সে লক্ষ্য অর্জন করতে পারিনি। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথ গ্রহণ করতে হবে।

বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, বিজয় অর্জনের এতদিন পরেও আজকে প্রশ্ন উঠেছে- স্বাভাবিক জীবন ও মৃত্যুর গ্যারান্টি আমাদের নেই কেন?

Leave a comment