ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণ : গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জঙ্গি সাজিদ ও শাহনূর
স্টাফ রিপোর্টার: গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অর্থাৎ নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে সরানো যাবে না, এটি বুঝতে পেরেই ৫ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ছক আঁকে জামায়াতে ইসলামী ও জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১৫০ জন নারী ও ১৫০ জন যুবককে বিশেষ প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। এদের নেতৃত্বে রয়েছে ১৩ জঙ্গি দম্পতি। বাংলাদেশে সেই সময় প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকায় পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তবে স্বামী-স্ত্রী সেজে প্রশিক্ষিত ওই নারী-পুরুষ জঙ্গিরা এখন বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে, কয়েকজন ঢুকেও পড়েছে।
বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার নারায়ণগঞ্জের সাজিদ ওরফে রহমতুল্লা ও শাহনূর ভারতীয় গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসবাদে এসব তথ্য দিয়েছে। তারা জানান, জঙ্গিদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশে অরাজকতা তৈরি ও জোর করে ক্ষমতা দখল করা। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের লালগোলার লাদেন ওরফে মোফাজ্জল হোসেনের তত্ত্বাবধানে বর্ধমানসহ পশ্চিমবঙ্গের আরো কয়েকটি স্থানে এজন্য জঙ্গি প্রশিক্ষণ, বোমা ও গ্রেনেড তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
গ্রেফতার দু জঙ্গি আরো জানান, এ লাদেনের হাতে এখনো রয়েছে জেএমবির অর্থভাণ্ডার। জামায়াতে ইসলামীর সব নির্দেশ আসছে তার কাছেই। প্রশিক্ষিত জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি এবং তার কাছেই রয়েছে ওই জঙ্গিদের সাথে যোগাযোগের নম্বর।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, লাদেন ও তার স্ত্রী এবং ১৩ জঙ্গি দম্পতিকে হন্য হয়ে খোঁজা হচ্ছে। সাজিদ গ্রেফতার হলে জেএমবির জঙ্গি প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমের দায়িত্ব বর্তায় তাদের ওপর। দেশের বাইরে থেকে জঙ্গিদের জন্য আসা বিস্ফোরক কোথায় সরবরাহ করা হবে সে খবরও জানে ওই ১৩ জঙ্গি দম্পতি। তাদের ব্যাপারে আরো তথ্য পেতে শাহনূরকে ফের হেফাজতে নেয়া হতে পারে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সাজিদকে জেরা করে জানা গেছে, ২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পরও ৩/৪ দিন ইউসুফ, মোজাম্মেল ছিলো খাগড়াগড়ের ঘটনাস্থলের কাছেই। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তারা জিহাদি বই, জঙ্গি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যুবক-যুবতীদের ঠিকানা, ফোন নম্বর লেখা ডায়েরিগুলো পুড়িয়ে ফেলে। তালহা ও তার স্ত্রী ময়না, বোরহান শেখ ও তার স্ত্রী, মোফাজ্জল ও তার স্ত্রী বর্ধমান, শিমুলিয়া এবং লালগোলায় তিনটি জঙ্গি মডিউল চালাতো। লালগোলার মাদরাসার জন্য জমি দিয়েছিলো মোফাজ্জল হোসেন ওরফে লাদেন? মোফাজ্জল লাদেনের মতো পোশাক পরতে, তার কথাবার্তা, ভাবভঙ্গি নকল করতে ভালোবাসে? তাই তার নাম হয়ে যায় লাদেন।