ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে ইউপি মেম্বারের অব্যাহতি চাওয়া এবং

জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারার ব্যর্থতা অকপটে স্বীকার করে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন একজন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য। স্থানীয় সরকারের তৃণমূল তথা নিম্নধাপের একজন জনপ্রতিনিধি। তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। ভোট তথা ম্যান্ডেট নিতে তাকে সেবার প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ দুরস্ত, তিনি তার এলাকাবাসীর হিস্যা আদায়েও অবহেলিত। এ কারণ দেখিয়ে তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার ফারুক হোসেন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে গতপরশু আবেদন করেছেন। তাঁর নির্বাচনী এলাকার জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাতে না পারার কারণেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন তিনি। ব্যর্থতা স্বীকার করলেও তাঁর এ কারণ দেখানো মূলত পুঞ্জিভূত ক্ষোভেরই বহির্প্রকাশ। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, তিনি কেন বঞ্চিত? নাকি জনগণের জন্য আকাশ ছোঁয়া প্রত্যাশা তাকে বিষণ্ণতায় ভুগিয়ে কোনঠাসা করেছে? প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজতে অবশ্যই তদন্তের দাবি রাখে। ইউনিয়ন পরিষদ যেহেতু একজন চেয়ারম্যানের ইচ্ছেই চলে না, সেহেতু সকল দোষে দোষী করাও চলে না। ইউনিয়ন পর্যায়ে সকল বরাদ্দ সবসময় যে স্বচ্ছভাবে উপকারভোগীদের নিকট পৌঁছায় তা বলা কঠিন। অনিয়ম তো রয়েছেই। একজন চেয়ারম্যান, ৯জন ওয়ার্ড মেম্বার ও ৩ জন সংরক্ষিত মহিলা মেম্বারসহ একজন সচিবকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত। শুধু ট্যাক্স আদায় নয়, সরকারি বরাদ্দ যথাযথভাবে বণ্টন বিলির পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব রয়েছে। ইউপি মেম্বার ফারুক হোসেনকে তার ওয়ার্ডবাসী ভোটে নির্বাচিত করেছে। তা হলে তিনি কেন অবহেলিত হবেন?

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবমুক্ত নয়। যদিও ইউনিয়ন পরিষদ রাজনৈতিক দল প্রভাবমুক্ত রাখতে পারলে তার সুফল জনগণই ভোগ করে। কালক্রমে নির্বাচনে যেমন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবে প্রভাবিত হয়, তেমনই পরিষদও রাজনৈতিক আত্মীয়করণ মুক্ত থাকে না। ফারুক হোসেনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হিস্যা বঞ্চিত করা হলে দুঃখজনক। ঘটনার স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।