চুয়াডাঙ্গার ভি.জে ও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ৩৫ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত

অভিভাবকরা হতাশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে এসএসসি ফরম পূরণের সুযোগ পেয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বঞ্চিত হয়েছে দুটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩৫ জন ছাত্রছাত্রী। এসব শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকরা হতাশ হয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২১ জন ছাত্র এবং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৪ জন ছাত্রী টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করায় এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর ছিলো ফরম পূরণের শেষ দিন।

বাংলাদেশ শিক্ষক অভিভাবক ফোরাম চুয়াডাঙ্গা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোত্তালিব এ ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আব্দুল মোত্তালিব জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। টেস্ট পরীক্ষার নামে কারো পড়াশোনা থমকে দেয়া যাবে না। তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, স্থানীয় দুটি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য মাসে ১০ লাখ টাকা করে বেতন দেয়া হয়। যেসব শিক্ষকদের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ফেল করেছে, ওইসব বিষয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে নিরীহ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এজন্য শিক্ষা সংশ্লিষ্টদেরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৭ সালে তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করার পর চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসব শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলো। চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি টেস্ট পরীক্ষায় ২৪১ জন অংশ নিয়ে পাস করে ২১৫ জন। এছাড়া বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেডিকেল সনদ দিয়ে আরো পাঁচজন উত্তীর্ণ হয়েছে। সুযোগ বঞ্চিত হয়েছে ২১ জন। অপরদিকে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ২৩৭ জন টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ২২৩ জন এবং ফেল করেছে ১৪ জন। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই ফেল করেছে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত সৃজনশীল গণিত, ইংরেজি ও পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষায়।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ভি.জে সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিশোরী মোহন সরকার জানান, এবারের টেস্ট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদেরকে পরীক্ষার বাইরে রাখায় আগামীতে তাদের দক্ষতা বাড়বে। নিচের ক্লাসের শিক্ষার্থীরা আরো সতর্ক হবে। অপরদিকে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুল হোসেন ১৪ জন ফেল করার কথা স্বীকার করলেও কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

চুয়াডাঙ্গা একাডেমীর প্রধান শিক্ষক সুকেশ কুমার বিশ্বাস জানান, আমার বিদ্যালয়ে বেশ কয়েকজন ছাত্র টেস্ট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হয়েছিলো। তবে পরিচালনা কমিটির সভার অনুমোদনক্রমে তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

এদিকে একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, একই জেলায় এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে দু ধরনের নিয়ম কখনই মেনে নেয়া যায় না। বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা চার থেকে পাঁচ বিষয়ে ফেল করে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেলেও সেখানে সরকারি দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক বিষয়ে ফেল করায় পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এটা গভীর ষড়যন্ত্রের আলামত। যা সরকারের শিক্ষানীতির পরিপন্থি বলেও অনেক অভিভাবক মন্তব্য করেন।

Leave a comment