কাজির জেল : সহকারী কাজি এবং কনের পিতাকে জরিমানা

দামুড়হুদার সুবলপুরে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে বন্ধ : ভ্রাম্যমাণ আদালত

 

বখতিযার হোসেন বকুল/মোস্তাফিজুর রহমান কচি: দামুড়হুদার সুবলপুরে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে বন্ধসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের কাজি চাকুলিয়া গ্রামের লূৎফর রহমান টেংরার ছেলে শামসুল হককে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং সহকারী কাজি সিরাজুল ইসলামকে ৫ হাজার এবং কনের পিতাকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক। গতকাল বুধবার বিকেল ৫টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের সুবলপুর সুখসাগর পাড়ার মতিয়ার রহমানের মেয়ে পাটাচোরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী সাহিদা খাতুন ময়নার (১২) সাথে জীবননগর উপজেলার কুলতলা গ্রামের আ. গফুরের ছেলে রাজিব হোসেনের গতকাল বুধবার বিয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়। দুপুরে প্রায় ৫০/৬০ জন বরযাত্রীসহ বর আসে বিয়ে বাড়িতে। নাস্তার পর্ব শেষ করার পরপরই সহকারী কাজি সুবলপুর গ্রামের ছাব্দার আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম শুরু করেন বিয়ে পড়ানোর আগে নিকাহ নামায় লেখালেখির কাজ। বিষয়টি দামুড়হুদা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাজ কুমার পাল গোপনে জানতে পেরে তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে হাজির হন বিয়ে বাড়িতে। এ সময় সহকারী কাজি ইউএনও’র উপস্থিতিতেই নিকাহ রেজিস্ট্রার খুলে ছেলের নাম ঠিকানা লেখার কাজ করছিলেন। ইউএনও কাজির কাছে থাকা ছেলেমেয়ের জন্ম নিবন্ধনের সনদে দেখেন মেয়ের জন্ম তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১২ এবং ছেলের জন্ম তারিখ ৮ নভেম্বর ১৯৮৮। তিনি সাথে সাথে নিকাহ রেজিস্ট্রার জব্দ করেন এবং ওই বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দেন। তিনি এ সময় সংশ্লিষ্ট কাজি শামসুল হককে আটক করতে কাজির কার্পাসডাঙ্গাস্থ বাড়িতে হানা দেন। কাজিকে বাড়িতে না পেয়ে সহকারী কাজি সিরাজুল ইসলাম ও মেয়ের পিতা মতিয়ার রহমানকে আটক করেন। পরে সহকারী কাজির মাধ্যমে তাকে মোবাইলফোনে কৌশলে ডেকে নেন এবং বাল্যবিয়ে পড়ানোর অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ১৯২৯’র ৫ ধারায় কাজি শামসুল হককে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। সেই সাথে বিয়ে পড়ানোর সহযোগী হিসেবে সহকারী কাজি সিরাজুল ইসলামকে ৫ হাজার টাকা এবং মেয়ের পিতাকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় নিকাহ রেজিস্ট্রার চেক করে দেখা যায় প্রায় শতাধিক বিয়ের ঘটনায় ছেলে ও মেয়ের নাম ঠিকানা লেখা থাকলেও অধিকাংশ মেয়েরই বয়স লেখা নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সিএ ফয়জুল ইসলাম ও দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই আফজাল হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কাজে সহযোগিতা করেন।

Leave a comment