আলমডাঙ্গার কৃষ্ণপুরে দিনদুপুরে ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে একদল যুবকের হানা
স্টাফ রিপোর্টার: ফিল্মি স্টাইলে বাড়িতে ঢুকে অপহরণের পর বিভিন্ন স্থানে নিয়ে হাতুড়িপেটা করা হয়েছে আলমডাঙ্গা কৃষ্ণপুরের কৃষক মনিকে। ২০/২৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে একদল যুবক দিনদুপুরে তার বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায় গতকাল রোববার। দিনভর বিভিন্ন স্থানে নিয়ে নির্যাতন করে তাকে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয়া হয়। পাওনা টাকা আদায় করার জন্য এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে কেউ কেউ বললেও ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। মনিসহ তার পরিবারের লোকজন চরম আতঙ্কে ভুগছে।
এলাকাসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের বটতলাপাড়ার মৃত মঙ্গল মণ্ডলের ছেলে কৃষক মনির উদ্দিন ওরফে মনি (৫৫) গতকাল রোববার দুপুরে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। বেলা দেড়টার দিকে ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেলে প্রায় ৪০/৫০ জনের একদল যুবক গিয়ে তার বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় অবস্থা বেগতিক দেখে মনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অজ্ঞাত যুবকরা মনিকে তাড়িয়ে ধরেন এবং একটি থ্রিহুইলারে তুলে নিয়ে চুয়াডাঙ্গার দিকে নিয়ে যায়। এলাকাবাসী জানায় অজ্ঞাত যুবকরা মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিতে দিতে চুয়াডাঙ্গার দিকে থেকে কৃষ্ণপুরে ঢুকে এ লঙ্কাকাণ্ড ঘটনায়।
সূত্র জানায়, মনিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজের মাঠে। সেখানে কতিপয় যুবক নির্যাতন চালায় মনির ওপর। তারা মনির বুকে উপর্যুপরি লাথি মারে এবং হাতে-পায়ে হাতুড়ি দিয়ে অসংখ্য আঘাত করে। তিনি চিৎকার চেঁচামেচি করলেও কেউই তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। এক পর্যায়ে মনিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় চুয়াডাঙ্গা স্টেডিয়ামের নিকটবর্তী নুরনগর বিএডিসি ফার্মের ভেতরে। সেখানে একটি গাছের গোড়ায় তাকে বসিয়ে রাখা হয় এবং বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়। সন্ধ্যায় মনিকে তার নিকটজনদের কাছে ছেড়ে দেয়া হয়। গতরাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মনি খুবই অসুস্থ হয়ে বাড়িতে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে আছেন।
এদিকে কী কারণে অজ্ঞাত যুবকরা সন্ত্রাসী কায়দায় একজন কৃষককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়, এ ব্যাপারে গ্রামের কেউই মুখ খুলতে চায়নি। গ্রামবাসী কেউ কেউ জানায়, আমাদের নিরাপত্তা নেই। যারা দিনদুপুরে সন্ত্রাসীদের মতো বাড়ি থেকে মানুষ অপহরণ করে নিয়ে যেতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে কিছু বললে জান থাকবে না। তবে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, মনি ও তার ছেলেরা বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা প্রতারণা করে আদায় করেছেন। অথচ চাকরি দিতে পারেননি। সেইসব টাকা আদায় করার জন্যই কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে আহত মনির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গতরাতে জানান, চুয়াডাঙ্গার ডিঙ্গেদহ এলাকার সেলিম নামের একজন আমার কাছে টাকা পায়।
দিনদুপুরে বাড়ি থেকে কৃষক মনিকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান দৈনিক মাথাভাঙ্গার সাথে গতরাতে বলেন, ‘এরকম একটা ঘটনার কথা আমার কানে এসেছে। তবে কেউ কোনো প্রকার অভিযোগ করেনি।’