ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

 

ইবি প্রতিনিধি: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ৩৬ বছরে পদার্পণ করবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ শহর থেকে যথাক্রমে ২৪ ও ২২ কি.মি দূরে শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুর নামক স্থানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরশাদ সরকার ১৯৮৩ সালের ১৮ জুলাইয়ের এক আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়কে গাজীপুরের বোর্ড বাজারে স্থানান্তর করে। শুরু হয় আন্দোরলন। প্রবল আন্দোলনের একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ১৯৮৯ সালের ৩ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯৮৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। ১৯৯০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে গাজীপুর থেকে কুষ্টিয়ায় স্থানান্তর করা হয়। এ আদেশ ২২ জানুয়ারি ১৯৮৯ হতে কার্যকর ঘোষণা করা হয়। ১৯৯০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তার সাবেক ক্যাম্পাস শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরে স্থানান্তর হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। ১৯৮১ সালের ৩১ জানুয়ারি দুটি অনুষদের অধীনে চারটি বিভাগে ৩০০ ছাত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক ড. এএনএ মমতাজ উদ্দিন চৌধুরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫টি অনুষদের অধীনে ২২টি বিভাগ রয়েছে। ২২টি বিভাগের মধ্যে শুধুমাত্র তিনটি বিভাগ (আল কোরআন, আল হাদিস এবং দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ) ইসলাম ও ধর্ম সম্পর্কিত। বাকি ১৯টি বিভাগই সাধারণ এবং কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন, আইন ও শরিয়াহ এবং বিজ্ঞান অনুষদের অধীন। বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যাও প্রায় ১৪ হাজার। মোট আয়তন ১৭৫ একর। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান উপউপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনটি উদযাপন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূটির মধ্যে রয়েছে আজ সকাল সাড়ে ৮টায় প্রশাসন ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আবাসিক হলসমূহে বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত, সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি প্রশাসন ভবন থেকে শুরু ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করবে। শোভাযাত্রায় নেতৃত্বে দেবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার ও উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান।

এক নজরে ইবি: বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১টি ইনস্টিটিউট, ৩৫৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা, ৩০০ জন কর্মকর্তা, ১৭৯ জন সহায়ক কর্মচারী, ২৯২ জন সাধারণ কর্মচারী রয়েছেন। ক্যাম্পাসে আছে ২টি তিনতলা প্রশাসনিক, ৪টি ছাত্র হল ও ৩টি ছাত্রী হল, ১টি অত্যাধুনিক ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (টিএসসিসি), উপাচার্যের বাসভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ক্যাম্পাসে ৯টি ও কুষ্টিয়া শহরে ১০টি কোয়ার্টার, স্বাধীনতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্যমুক্ত বাংলা ও স্মৃতিসৌধ, ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত শহীদদের স্মারক শহীদ স্মৃতিসৌধ, ১টি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ (দেশের তৃতীয় বৃহত্তর মসজিদ), একটি ল্যাবলেটরি স্কুল অ্যন্ড কলেজ রয়েছে।