বিশেষ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার গ্রামগঞ্জে মাদকব্যবসার ছড়াছড়ি। মাঝে-মধ্যে গাঁজাখোরসহ ছোটখাট ব্যবসায়ী গ্রেফতার হলেও রাঘব-বোয়াল থাকে নিরাপদে। পুলিশ ছাড়াও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর হঠাৎ হঠাৎ অভিযান পরিচালনা করলেও সাধারণত চিহ্নিত মাদকব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে না। মাদকের রাজ্যের চুনোপুটি, কিছু ছোটখাটো গাঁজা বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে। বছরের পর বছর এ ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটে। এ যেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। আলমডাঙ্গা অঞ্চলে প্রচুর লালন অনুসারী বাউল ফকির বসবাস করেন। ঐতিহ্যবাহী এ সকল জনগোষ্ঠী অনেকটা ঐতিহ্যগতভাবে সাধন-ভজনের অংশই করে নিয়েছেন সিদ্ধি ও গাঁজাকে। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টার্গেট সাধারণত এরা। অথচ কালে-ভাদ্রে ছাড়া হেরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ যৌন উত্তেজক মাদকদ্রব্য ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয় না। ফলে প্রশাসন সম্পর্কে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টি বিরাজ করছে। আলমডাঙ্গা শহরের স্টেশন এলাকা, গোবিন্দপুর, পশুহাট, ক্যানেলপাড়া, এরশাদপুর, আনন্দধাম এলাকায় রয়েছে অনেকগুলো মাদকস্পট। একাধিক মাদকব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা নিয়মিত পুলিশ, আবগারি, ডিবি পুলিশকে মাসোয়ারা দিয়ে ব্যবসা করেন। শহরের কেন্দ্রস্থল বাবুপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে জমজমাট মাদকব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে আয়নাল হোসেন। হেরোইন, ফেনসিডিলসহ অনেক প্রকার মাদকের রমরমা ব্যবসা তার। স্টেশনের বুড়ি, কুটিও মাদকব্যবসার সাথে দীর্ঘদিন জড়িত। স্টেশন এলাকায় বেলগাছির ডামোশ গ্রামের এক হাতুড়ে ডাক্তার তার নিজের ডিসপেন্সারিতে বসে, ঘুমের ট্যাবলেট, কাশির সিরাপ, আজাদ ফার্মেসির ফেনসিলেক্সসহ কয়েক প্রকার ওষুধ এক সাথে মিক্সার করে নেশাদ্রব্য তৈরি করে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। পুটিমারীর শামীম ছাড়াও একাধিক প্রভাবশালী মাদকব্যবসায়ী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকতে আরামবোধ করে। ডামোশ গ্রামের ফেনসিডিল ব্যবসায়ী নিজু তো ধরাছোঁয়ার বাইরে। আলমডাঙ্গা ক্যানেলপট্টি নিকট অতীতেও ছিলো সবচে’ বড় মাদকের বাজার। রাত-দিন চলত মাদক বিকিকিনি। এখন বর্তমানে মাদকব্যবসার সে রমরমা অবস্থায় কিছুটা ভাটা পড়েছে। এখানে জাহিদ, রহিম মাদকের ব্যবসা চালাচ্ছে। জাহিদ তো জন কিনে তাদের হাতে মাদকদ্রব্য তুলে দিয়ে এলাকায় মাদকের সামাজ্য গড়ে তুলেছে। গোবিন্দপুরের রাজু, খাইরুল ফেনসিডিলের পুরোনো ব্যবসায়ী। পুলিশের হাতে গ্রেফতার না হওয়া, ক্ষেত্র-বিশেষে দহরম-মহরমের কারণে এলাকাবাসী এ সকল মাদকব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। এর সুযোগ নিয়ে মাদকব্যবসায়ীরা হয়ে উঠেছে বেপরোয়া।