মাথাভাঙ্গা মনিটর: পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় ২৪ বছর বয়সী এক বাংলাদেশিকে জাল কাগজপত্রসহ আটক করা হয়েছে। তার কাছে বিভিন্ন জাল ভারতীয় কাগজপত্র পাওয়া গেছে। একটি ঘর থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির নাম আবদুল জব্বার। তাকে শুক্রবার জাতীয় মহাসড়ক ২-এর নিকটবর্তী একটি এলাকায় লুকিয়ে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায়।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, তার কাছে মালয়েশিয়া থেকে কেউ একজন নিয়মিত অর্থ পাঠাতো। এ ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এর আরেকটি কারণও রয়েছে। বাংলাদেশে জব্বারের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের রানচন্দ্রাদি গ্রামে, সেখানে কয়েক বছর আগে জেএমবি নেতা আয়ুবুর রহমান আটক হয়েছিলো। সম্প্রতি ভারতের বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের সাথে জেএমবির নাম উঠে আসায় এ আটকের ঘটনাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন গোয়েন্দারা। আয়ুবুর রহমানের দেয়া তথ্যানুসারে ৱ্যাব ঢাকার অদূরে একটি গ্রেনেড তৈরির কারখানায় অভিযান চালায়। কিন্তু সেখানে আগে থেকে অবস্থানরত ৪ জঙ্গি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সে গ্রেনেড কারখানাটির সাথে খুব মিল রয়েছে বর্ধমানের একই রকম একটি গ্রেনেড কারখানার। আর বর্ধমানেই গত ২রা অক্টোবর বোমা বিস্ফোরিত হয়। স্থানীয় মানুষের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, সুকান্ত পল্লীর স্থানীয় উত্তম দাসের বাড়িতে সন্দেহজনক মানুষের আনাগোনা রয়েছে। এরপর জব্বারকে আটক করা হয়। বাড়ির মালিক উত্তম দাস একজন সবজি ব্যবসায়ী। তিনি স্বীকার করেছেন, তিনি জব্বারকে টাকার বিনিময়ে থাকতে দিয়েছেন। জব্বারকে আটক করার পর বেশ শান্ত মনে হয়েছে। সে নিজের পরিচয় দেয় ফারুক মোহাম্মদ নামে। এমনকি এ নামে ইস্যুকৃত এটিএম কার্ড ও অ্যাকাউন্ট নম্বরও দেখায় সে। এর সঙ্গে তার ছবিও মিলে যায়। কিন্তু তার বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি ছিল। এরপরই পুলিশ বাড়ির মালিক উত্তম দাসের সঙ্গে কথা বলে। উত্তম জানান, তার নাম জব্বার।
এরপর জব্বারকে তার কাগজপত্র কিভাবে পেয়েছে জিজ্ঞেস করা হলে সে বলে, ফারুক নামের একজনের সাথে উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরের একটি মাদরাসায় দু বছর পড়াশোনা করেছে সে। তার দাবি, এ আইডি কার্ড হচ্ছে ফারুকের। ফারুক সৌদি আরব চলে যাওয়ার সময় এগুলো তাকে দিয়ে যায়। কিন্তু ফারুকের আইডি কার্ডে জব্বার কিভাবে নিজের ছবি ঢুকালো সেটা বেশ রহস্যজনক। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমরা নিশ্চিত নই আদৌ ফারুক মোহাম্মদ নামের কারও অস্তিত্ব আছে কিনা। তবে গোয়েন্দারা সেই সাহারানপুর মাদরাসায় যাবেন নিশ্চিত হতে। জব্বার আরও দাবি করেছে, সে মাঝে বাংলাদেশে গিয়েছিল এবং আবার এক দালালের মাধ্যমে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে সামপ্রতিককালে। কখনও সে বলে, দালালকে ৩০০ রুপি দিয়েছে। আবার কখনও বলে ৩০০০ রুপির কথা। মালয়েশিয়া থেকেও সে টাকা পেতো নিয়মিত। জব্বারের দাবি, এ টাকা তার এক আত্মীয় পাঠাতো। জব্বার আগরতলা থেকে বিমানে করে কলকাতায় এসে পৌঁছায়। বিমানবন্দর থেকে উত্তম দাসের বাসায় থাকা শুরু করে সে। কিন্তু স্থানীয় কেউ পুলিশকে সতর্ক করে দেয়। হাওড়া পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাদে বলেন, আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তের বিষয়টি দেখছে। আমরা রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগকেও বিষয়টি জানিয়েছি।