পিয়ন দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবার কাজ

দামুড়হুদার মেমনগর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান না দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চিকিৎসাসেবা সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার যখন নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ঠিক সে সময় সরকারের এই প্রচেষ্টাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে বেকায়দায় ফেলার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেন ডাক্তার নামধারী এক শ্রেণির অসাধু সরকারি কর্মচারী। তেমনই অভিযোগ উঠেছে দামুড়হুদার মেমনগর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসারের বিরুদ্ধে। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী মেডিকেল অফিসার (সেকমো) ওয়াসিম মাঝে মধ্যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. নুরুন্নাহার নদী একদিনের জন্যও ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাননি বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে। অফিসের পিয়ন দিয়ে চালানো হচ্ছে চিকিৎসা সেবার কাজ। ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই এলাকার সাধারণ জনগণ। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকার ভুক্তভোগী জনসাধারণ।

জানা গেছে, চিকিৎসাসেবা সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু করে এবং প্রতিটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন মেডিকেল অফিসার, একজন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার, একজন ফার্মাসিস্ট ও একজন পিয়নকে নিয়োগ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করা হয়। ইতঃপূর্বে ডাক্তার স্বল্পতার কারণে অধিকাংশ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার দিতে না পারলেও বর্তমানে সেই সঙ্কট অনেকটাই কেটে গেলেও উপজেলার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে দেখা মিলছে না দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসারদের। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার মেমনগর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রেটি সরেজমিন পরিদর্শনে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান ফটকে তালা ঝুলানো দেখে এলাকাবাসীরা সংবাদিকদের খবর দেন। ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসারসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকেই পাওয়া যায়নি। চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যান দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তার সাথে মোবাইলফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করায় এ বিষয়ে তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে মোবাইরফোনে কথা হয় দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. একরামুল হকের সাথে। তিনি বলেন, ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসারের দায়িত্বে আছেন ডা. নুরুন্নাহার নদী। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ কেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উপসহকারী মেডিকেল অফিসার ওয়াসিম ইবলো ভাইরাস প্রতিরোধ টিমের সাথে আছেন। আর পিয়ন (এমএলএসএস) কুতুবুল ইসলাম অসুস্থ থাকায় বেলা ১২টার দিকে তালা বন্ধ করে বাড়ি চলে গেছেন। ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. নুরুন্নাহার নদী দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে একদিনের জন্যও আসেননি এলাকাবাসীর এমন অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য খোঁজ নিয়ে জানা যায় ডা. নুরুন্নাহার নদী মাস দেড়েক আগে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। সরকারি বিধি মোতাবেক উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তিনি একদিনের জন্যও যাননি ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। বিষয়টির সত্যতা খতিয়ে দেখে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসারের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিভাগীয় শাস্তির দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকার ভুক্তভোগী জনসাধারণ।