দর্শনা অফিস: ৫ম শ্রেণির ছাত্রী ১১/১২ বছরের মেয়ে মুক্তি। মুক্তির পুতুল খেলার বয়স এখনো পেরুইনি। সহপাঠীদের ধুলোবালিতে খেলার সময় এখনো কাটেনি মুক্তির। এ কোমল বয়সে মুক্তির মাথায় চাপিয়ে দেয়া হচ্ছিলো অপবাদের বোঝা। দর্শনা হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের ভুল চিকিৎসায় হতে হলো লাঞ্চনা-গঞ্জনার শিকার। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে শুনতে হলো কতো কথা। অবশেষে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চিকিৎসা ভুল প্রমাণিত হয়ে মুক্তি অ্যাপেন্টি সাইড অপরেশন করা হয়েছে। সুস্থ্য হয়ে মুক্তি বাড়ি ফিরেছে ।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ঝাঁজাডাঙ্গা মসজিদপাড়ার শহিদুল ইসলামের ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে মুক্তি বেশ কিছুদিন থেকে পেটের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলো। মুক্তিকে চিকিৎসার জন্য গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে নেয়া হয় দর্শনা হেলথ অ্যাড হোপ প্রা. হাসাপাতাল ও ডায়াগনস্টিক স্টোরে। ওই হাসপাতালে মুক্তির পেট আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হলে তাতে দেখা যায় বড় ধরনের সমস্যা। আল্ট্রাসনোগ্রাফির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মুক্তির পেটে ফাইবার ইউটাস রয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের আনাড়ি এক সেবিকা মুক্তির পরিবারের সদস্যদের গোপনে ডেকে জানায় মুক্তি গোপন সমস্যায় ভুগছে। এ কথায় যেন বাজ পড়ে পরিবারের সদস্যদের মাথায়। মহা চিন্তায় পড়ে মুক্তির পরিবারের সদস্যরা। প্রতিবেদন ভুল হতে পারে সন্দেহ হলে ফের অন্য একটি ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়। এতে দেখা যায় মুক্তির অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে। ওই দিনই বিকেলেই দর্শনা মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয় মুক্তির অ্যাপেন্ডিসাইটিস। গতকাল বুধবার বিকেলে মুক্তিকে হাসপাতাল থেকে সুস্থ্য অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে গেছে পরিবারের সদস্যরা। ফাইবার ইউটাসের বিষয়ে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে মতামত জানতে চাইলে তিনি জানান, ফাইবার ইউটাস সাধারণত ৪৫/৫০ বছর বয়সী মহিলাদের হয়ে থাকে। ফাইবার ইউটাস অস্ত্রোপচার করা হলে একজন নারী কখনো মা হতে পারবে না।
এদিকে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের পরিচালক শফিকুল ইসলাম জান্টুর বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। সচেতন ও ভুক্তভোগী মহল অভিযোগ খতিয়ে দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের সুদৃষ্টি কামনা করেছে।