চুয়াডাঙ্গার জীবননগর গয়েশপুর সীমান্তে বিপত্তি : এবার হত্যাকারী বিএসএফ নয় শেয়াল তাড়ানো ফাঁদ
জীবননগর ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর সীমান্তে বিদ্যুতস্পৃষ্টে দুজন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। গতপরশু মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল সকালে তাদের লাশ নেয়া হয় তাদের বাড়ি। পরে অবশ্য দুজনের মৃতদেহ পুলিশ হেফাজতে দেয়া হয়।
স্থানীয়রা বলেছে, ভারতীয় কৃষকের পেতে রাখা বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশি দু যুবক নিহত হয়েছেন। শেয়ালের আক্রমণ থেকে ক্ষিরার ক্ষেত রক্ষা করতে ভারতীয় কৃষক আব্বাছ আলী বৈদ্যুতিক এ ফাঁদ পেতে রাখে। বাংলাদেশি যুবক সুজাউদ্দিন (২৫) ও আনন্দর (১৮) করুণ মৃত্যুর পর সীমান্তে উত্তেজনা ছড়ায়। দু যুবকের বাড়ি জীবননগরের গয়েশপুর উত্তরপাড়ায়।
এলাকাবাসী ও নিহতদের পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলার গয়েশপুর-কুলাপাড়া সীমান্তে ৬৭ মেন পিলারের ২নং সাব পিলারের সন্নিকটে কাঁটাতারের পাশে একই মাঠে বাংলাদেশি ও ভারতীয় কৃষকদের চাষাবাদ রয়েছে। ভারতের কুলাপাড়া গ্রামের বিশারত আলী ওরফে বিশের ছেলে কৃষক আব্বাছ আলী তার ক্ষিরাক্ষেত শেয়ালের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে রাতে ক্ষেতে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে রাখে। ওই ফাঁদে পড়ে তাদের মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল এসএম মনিরুজ্জামান জানান, গয়েশপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী বক্স ওরফে আলী গেজার ছেলে সুজা ও মান্নান মণ্ডলের ছেলে আনন্দ চিহ্নিত ফেনসিডিল ব্যবসায়ী। ভারত থেকে ফেনসিডিল পাচার করে আনার জন্য রাত আনুমানিক ১১টার দিকে তারা বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর রাত ৩টার দিকে ভারতীয় ওই কৃষকের ক্ষেতের ভেতর দিয়ে যাওয়াকালে বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে তারা মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়। গতকাল বুধবার সকালে স্বজনেরা নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নেয়। পরে বিজিবি লাশ উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে।
জীবননগর থানার ওসি হুমায়ন কবির জানিয়েছেন, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট দেখার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। সীমান্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, নিহতরা সীমান্তে তাদের ক্ষেত পাহারা দিতে গিয়েছিলো বলে জেনেছি।
নিহত সুজার স্ত্রী আরিফা খাতুন জানান, তার স্বামী সুজাসহ যুবক আনন্দ সীমান্তে তাদের বেগুনক্ষেত পাহারা দিতে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গ্রামটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছে, নিহত দুজন একই গ্রামের মাহমুদের দু ছেলে মাদকব্যবসায়ী আতিয়ার রহমান আতি ও বাবলুর ফেনসিডিল আনার জন্য ভারতে অবৈধভাবে যাওয়াকালে তারা এ দুর্ঘটনায় পড়ে মারা যায়।