লাখো মুক্তিযোদ্ধাকে উৎসাহ যুগিয়েছেন বাবুয়া
মেহেরপুর অফিস: মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রেরণাদাতা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ‘জল্লাদের দরবারে’ নাটকের অন্যতম অভিনেতা শব্দ সৈনিক এবং বাংলা একাডেমীর পুরস্কারপ্রাপ্ত মেহেরপুরের শ্রী প্রসেনজিৎ বোস বাবুয়ার মৃত্যুতে শোকাহত মেহেরপুরবাসী। তার মৃত্যুতে শোকসভা করেছেন মেহেরপুরের সর্বস্তরের সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ।
গতকাল বুধবার বিকেলে মেহেরপুর শহীদ ড. সামসুজ্জোহা নগর উদ্যাগে অনুষ্ঠিত শোক সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ফরহাদ হোসেন। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ননী গোপাল ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ। জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাড. পল্লব ভট্টাচার্য, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক সাইদুর রহমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বশির আহমেদ, পৌর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ একরামুল আজিম, সুজন’র সাধারণ সম্পাদক শামীম জাহাঙ্গীর সেন্টু, সাংস্কৃতিক কর্মী শ্বাশত নিপ্পন, মৃত্তিকার সভাপতি মানিক হোসেন, অ্যাড. আব্দুস সালাম, পৌর কাউন্সিলর আল মামুন, অভিজৎ বোস মানা, সাবির সঙ্গীত একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ, আয়েশা আক্তার নিপা প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন অরণি’র সভাপতি নিশান সাবের ও প্রজন্ম মুক্তিযোদ্ধার আহ্বায়ক মাহবুবুল হক মন্টু। অনুষ্ঠান শুরুতে অসম্প্রদায়িক প্রগতিশীল ধারণার আজন্ম ধারক প্রসেনজিৎ বোস বাবুয়া’র স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সর্বস্তরের মানুষ সেখানে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
১৯৪০ সালের ১০ অক্টোবর প্রতাপশালী জমিদার বোস পরিবারের বসুভিলায় জন্মগ্রহণ করেন প্রসেনজিৎ বোস বাবুয়া। তার বাবার নাম শ্রী হিরন কুমার বোস ও মাতা শ্রীমতি অলোকা বোস। পড়ালেখা শেষ করে বাবার মৃত্যুর পর জমিদারি দেখাশোনার ভার নেন তিনি। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। রণাঙ্গনের সৈনিকদের উৎসাহ দিতে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের সাথে যুক্ত হন। প্রখ্যাত নাট্যকার কল্যাণ মিত্রের অনুরোধে তার লেখা জল্লাদের দরবারে নাটকে তিনি সৈয়দ হাসান ইমাম, আনোয়ারা, রাজু আহম্মেদ, আজমল হুদা মিঠু, সুমিতা দেবীসহ অনেক গুণী শিল্পীর সাথে অভিনয় করে লাখো মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ যুগিয়েছেন। সাংবাদিক মার্ক টালি তার বাড়িতে আতিথেয়তা গ্রহণ করে মেহেরপুরের বিধ্বস্ত অবস্থার খবর সংগ্রহ করেছেন।
প্রসঙ্গত, শ্রী প্রসেনজিৎ বোস বাবুয়া গত ১৩ অক্টোবর মারা যান।