ব্যাপারীরা খুশি হলেও চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ

দামুড়হুদায় সাপ্তাহিক হাটে পানির দরে বিক্রি হলো বেগুন ও কাঁচামরিচ

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় পানির দরে বিক্রি হলো বেগুন। ৩০ টাকার বেগুন পাইকারি কিনেছেন মাত্র ৩ থেকে ৫ টাকা কেজি দরে। ফলে স্থানীয় ব্যাপারীরা খুশি হলেও খুশি নন বেগুন চাষিরা। তাদের কপালে লক্ষ্য করা গেছে গেছে চিন্তার ভাঁজ। অতিরিক্ত সরবরাহকেই দায়ী করলেন স্থানীয় ব্যাপারীরা। গতকাল রোববার সাপ্তাহিক হাটে এ চিত্রই দেখা গেছে।

damurhuda pic. 12.10.14 (4)

জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রতি বুধ ও রোববার বসে সাপ্তাহিক হাট। এলাকার সবজি চাষিরা ওই হাটেই বেচাবিক্রি করে থাকেন তাদের উৎপাদিত শাক-সবজি। গতকাল রোববার ওই সাপ্তাহিক হাটে এলাকার অধিকাংশ সবজি চাষিরাই হাজির হন বেগুনের ঝুড়ি নিয়ে। বেগুন পট্টিতে বসে গুণের মেলা। ৩ থেকে ৫ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে বেগুন। সরবরাহ বেশি হওয়ায় চাষিদের অনেকটা পানির দরে বিক্রি করতে বাধ্য হয়।

হাটে বেগুন বিক্রি করতে আসা বেগুনচাষি জয়রামপুর মল্লিকপাড়ার মুনতাজ আলীর ছেলে নূর ইসলাম, নুতন বাস্তুপুরের বাবলু, দামুড়হুদা খাঁপাড়ার ওসমান জানান, এ বছর বেগুনের বাজার মূল্য ভালো হওয়ায় চলতি মরসুমে একটু বেশি করেই বেগুনের আবাদ করেছি। ১ বিঘা জমিতে বেগুনের উৎপাদন খরচ পড়ে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো। অথচ বেগুন বিক্রি করলাম পানির দরে। বাজার দর বৃদ্ধি না হলে অধিকাংশ বেগুন চাষিকেই পড়তে হবে লোকসানের মুখে। ওই সমস্ত বেগুন চাষিদের সাথে যখন কথা হয় তখন তারা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শফিকুলের চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। বেগুনের কি অবস্থা জিজ্ঞাসা করতেই বেগুন চাষিরা বললেন, ভাই আজ বেগুনের দাম নেই। ১ কেজি বেগুন বিক্রি ১ কাপ চা হচ্ছে। কেউ কেউ বললেন, মরেছিই তো একটু তামাক খেয়ে নিই। তাই বেগুন বেচে চা খাচ্ছি।

হাটে কাঁচা মরিচ বিক্রি করতে আসা দামুড়হুদার উত্তরচাঁদপুরের একরামুল জানান, আমি ২৩ কেজি মরিচ নিয়ে এসেছিলাম। মাত্র ২৫ টাকা করে কেজি বিক্রি করলাম। দাম খুবই কম। যদি বাজার মূল্য এরকম থাকে তাহলে বেগুনের পাশাপাশি মরিচচাষিরাও পড়বেন লোকসানের মুখে।

হাটে বেগুন কিনতে আসা স্থানীয় ব্যাপারি জয়রামপুরের সৈয়দ আলী জানান, ঈদের পর এটাই প্রথম হাট। ব্যাপারিও কম। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ার ফলেই বেগুনের দাম পড়ে গছে বলেও তিনি জানান। হাটমালিক দামুড়হুদা ফকিরপাড়ার বদর উদ্দিন বলেন, বেগুন ও মরিচচাষিদের যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাদের মরা ছাড়া পথ নেই। তাদের পাশাপাশি মরতে হবে আমাদেরও। কারণ চাষিরা দাম না পেলে আমাদের খাজনা দেবে কোথা থেকে।