স্টাফ রিপোর্টার: কুয়াশা আর ধোঁয়া মিললে তবে তাকে বলে ধোঁয়াশা। শব্দটা আরেকটা অর্থে ব্যবহৃত হয়- যখন কোনো কিছু নিয়ে দেখা দেয় সংশয় বা বিভ্রান্তি। আগামীকালের ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচে আক্ষরিক অর্থেই ধোঁয়াশা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মুখোমুখি মানেই মহারণ। হোক না সেটা নিখাদ প্রীতি ম্যাচ। দু বন্ধু মেসি-নেইমারও আরও একবার মুখোমুখি। ফলে কাল বেইজিংয়ের প্রীতি ম্যাচ নিয়ে অন্য রকম একটা কৌতূহল তো আছেই ফুটবলবিশ্বের। বেইজিংও রীতিমতো জ্বরে আক্রান্ত। কিন্তু চীনের রাজধানী শহরটির পরিবেশ দূষণের ফলে সৃষ্ট প্রতিকূল আবহাওয়া কালকের ম্যাচটিকে ঠিকমতো হতে দেবে কি না, হলেও ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মহারণের উত্তাপ পুরোমাত্রায় মিলবে কি-না, এ নিয়ে সংশয় আছে।
এরই মধ্যে ব্রাজিল কোচ কার্লোস দুঙ্গা বেইজিংয়ের আকাশে ধেয়ে আসা ধোঁয়াশা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। দুঙ্গা জানিয়েছেন, কালকের ম্যাচে কোনো খেলোয়াড়কেই বেশিক্ষণ মাঠে তিনি রাখতে চান না স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কথা ভেবে। ফলে প্রীতি ম্যাচে একাধিক খেলোয়াড়কে বদলি করানোর সুবিধা তিনি নেবেন। সাধারণত প্রীতি ম্যাচগুলোতে আয়োজকেরা শর্ত বেঁধে দেয়, বড় তারকাদের কমপক্ষে কতো মিনিট মাঠে খেলাতে হবে সে ব্যাপারে। এমন কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলে কালকের ম্যাচে হয়তো খুব বেশিক্ষণ বেইজিংবাসীর তৃষিত চক্ষুকে ফুটবল সুধা পান করাতে পারবেন না মেসি-নেইমার।
এ ব্যাপারে ব্রাজিলের খেলোয়াড়েরা আর্জেন্টিনার তুলনায় বেশি উচ্চকিত। স্ট্রাইকার রবিনহো তো বলেই দিয়েছেন, ঠিকমতো নিঃশ্বাসই নিতে পারছি না। আমার গলা শুকিয়ে আসছে। মনে হচ্ছে আবর্জনার জঞ্জালে আগুন ধরানো হয়েছে, আর তারই পাশে দাঁড়িয়ে আছি। গরম ধোঁয়ার মতো লাগছে বাতাস। এমন আবহাওয়া দেখে যে অভ্যস্ত নন, সেটা বোঝা গেছে ফিলিপ্পে কৌতিনহোর কথায়, আবহাওয়া বড্ড অদ্ভুত। কখনো কখনো দিনের বেলায়ও মনে হবে এখন যেন মাঝরাত্রি। খুবই ধুলোময়। আর দুঙ্গা তো বলেই দিয়েছেন, বেইজিংয়ের দূষণ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দুদলের জন্যই খারাপ। এটা কীভাবে সবচেয়ে ভালো উপায়ে সামলানো যায়, আমাদেরকে সেই চেষ্টাই করতে হবে। আবহাওয়া পাল্টানোর ক্ষমতা তো আর আমাদের নেই। তবে আমাদের পরিকল্পনা হলো অনেকগুলো বদলি খেলোয়াড় নামানো। যেন কেউ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
ব্রাজিলকে গুঁড়িয়ে দিতে চান মার্তিনো: জার্মানিকে গুঁড়িয়ে দেয়া পারফরম্যান্স ব্রাজিলের বিপক্ষেও দেখতে চান আর্জেন্টিনার কোচ জেরার্দো মার্তিনো। আগামী শনিবার চীনের বেইজিংয়ে বার্ডস নেস্ট পরিচিত স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে লাতিন আমেরিকার দু পরাশক্তি আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। আলেহান্দ্রো সাবেইয়ার জায়গায় আসা মার্তিনোর প্রথম ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে ৪-২ গোলে উড়িয়ে দেয় আর্জেন্টিনা। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের বিপক্ষে একই মানের পারফরম্যান্স দেখতে চান বার্সেলোনার সাবেক এই কোচ। জার্মানির বিপক্ষে আমরা যা করেছি, তাই করার চেষ্টা করবো আমরা। চীনে মুখোমুখি হলেও দুই খেলায় উত্তেজনার কোনো কমতি থাকবে বলে মনে করেন না মার্তিনো। জাতীয় দলগুলোর ম্যাচের মধ্যে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল খেলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। খেলা কোথায় হচ্ছে, তা কোনো ব্যাপার নয়। এটা সবসময়ই আমাদের মধ্যকার ইতিহাসের জন্য গুরুত্বপুর্ণ আর এখন খেলোয়াড়দের জন্যও। জার্মানির বিপক্ষে আগের প্রীতি ম্যাচে চোটের কারণে খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি। মার্তিনো জানান, এবার সম্পূর্ণ সুস্থ চারবারের ফিফা ব্যালন ডি অর বিজয়ী খেলোয়াড়। আর চীনের রাজধানীতে নেইমারদের মুখোমুখি হওয়ার জন্য উন্মুখ তিনি।
স্বার্থপর নয় রোনালদো: কার্লো আনচেলত্তির চোখে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো স্বার্থপর নন; বরং দলের জন্য পর্তুগাল ফরোয়ার্ড নিজেকে উজাড় করে দেন বলেই মনে করেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ। ফরাসি একটি সাময়িকীকে সাক্ষাৎকারে রোনালদোকে নিয়ে কথা বলার সময় প্রিয় শিষ্যের প্রশংসায় আবারো পঞ্চমুখ হন রিয়াল মাদ্রিদকে দশম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা এনে দেয়া এই কোচ। আমাকে বলতেই হচ্ছে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো আমাদের সবচেয়ে মেধাবী ফুটবলার এবং সে দলের বাকি সবাইকে অনেক সাহায্য করে। যখন একজন এক মরসুমে ৫০ গোল করে, তার অর্থ হচ্ছে সে তার দল এবং কোচকেও নিশ্চিতভাবে সহযোগিতা করছে। সে স্বার্থপর নয় এবং দলের প্রয়োজনে সব জায়গায় খেলতেও তৈরি থাকে, যোগ করেন ইতালির এ কোচ। সাবেক ছাত্র জলাতান ইব্রাহিমোভিচকে নিয়েও সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন আনচেলত্তি। অনেকের কাছে ইব্রাহিমোভিচ অসহ্য হলেও আনচেলত্তির কাছে তা নয়। সুইডিশ স্ট্রাইকারকে উদার মনের খেলোয়াড় মনে করেন পিএসজির সাবেক এই কোচ।