বাংলাদেশ নয় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন শেখ মুজিব

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: আবারো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গত সোমবার লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ইতিহাসের প্রতিটি পর্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছে। দলটির নেতা শেখ মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি, অবিভক্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। আন্দোলন টের পেলে আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গত সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় (লন্ডন সময় রাত ১০টা) লন্ডনের ইয়র্ক হলে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও বিশ্বনেতা জিয়াউর রহমান : প্রেক্ষিক বাংলাদেশ শীর্ষক এ আলোচনাসভা এবং যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে জিয়াউর রহমান ওয়ের নামফলক হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যুক্তরাজ্য বিএনপি। ১ ঘণ্টা ১৭ মিনিটের বক্তৃতায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযুদ্ধ, শেখ মুজিব হত্যা, সিপাহী জনতার বিপ্লব, জিয়াউর রহমানের শাসনামল, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত্তি রচনাসহ ঐতিহাসিক গবেষণার নানা তথ্যভিত্তিক চিত্র তুলে ধরেন।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, বিএনপির স্বনির্ভর সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা এমএ মালেক, ব্যারিস্টার এমএ সালাম, আবদুল হামিদ চৌধুরী, আবদুল হাই ও রফিকউল্লাহ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ।

আওয়ামী লীগকে ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশ বিরোধী বলে অভিহিত করে তারেক রহমান বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়ে ও স্বাধীনতার ঘোষণায় স্বাক্ষর না করে শেখ মুজিব নিজেকে পাকবন্ধু হিসেবে প্রমাণ করেছেন। ইতোমধ্যে হাসিনা সরকারের সাবেক মন্ত্রী একে খন্দকার তার বইয়ে এমনটি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, প্রকৃত তথ্য তুলে ধরায় ইতোমধ্যে মুক্তিযুদ্ধের ১১ জনের মধ্যে ছয়জন সেক্টর কমান্ডারকে আওয়ামী লীগ রাজাকার বানিয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, আর মুক্তিযুদ্ধের কোনো প্রস্তুতি না নেয়ায় ৯ মাসের যুদ্ধে আমাদের এতোবেশি মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। এসব মানুষের মৃত্যুর দায় শেখ মুজিবের। আর এ জন্য তাকে জাতির পিতা নয়, জাতির হত্যাকারী বলা যায় কি-না তা জাতি জানতে চায়। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরও শেখ মুজিব পাকিস্তানের পাসপোর্ট বহন করেছেন। তিনি ৭২’র ১০ জানুয়ারি পাক পাসপোর্ট নিয়ে লন্ডন ও ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। পাকিস্তানের পাসপোর্ট বহন করায় তিনি অবৈধ রাষ্ট্রপতি।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, মতিয়া চৌধুরী ও রাশেদ খান মেনন আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মুজিবের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছিলেন। আর শেখ হাসিনা তাদের মন্ত্রী বানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিএনপির জনসম্পৃক্ততা ও সফলতার দৌড়ে কুলিয়ে উঠতে না পেরে শেখ হাসিনা এবার ভাড়া করা ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে গাট বেঁধেছেন। শেখ মুজিব ও খালেদ মোশাররফের হত্যার সাথে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সম্পৃক্তার ইঙ্গিত করে তিনি এ বিষয়ে ইনুর রিমান্ড দাবি করেন।

ক্ষমতা স্থায়ী করতে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে দেখানোর চক্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ এনে তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনা জুজুর ভয় দেখান। বাংলাদেশের মানুষকে জঙ্গি হিসেবে প্রমাণ করতে চান। এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আমলেই জঙ্গির উত্থান হয়েছে। বিএনপি এসে তা দমন করে। বাংলাদেশকে জঙ্গিমুক্ত করতে শেখ হাসিনার সরকারকে সরাতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সবাই দলমত নির্বিশেষে শেখ হাসিনার পতনের মাধ্যমে দেশকে জঙ্গিমুক্ত করা হবে।
নেতাকর্মীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে নেই। আওয়ামী লীগ জনগণের ভাষা বোঝে না, একাত্তরেও তারা এটি বোঝেনি। আন্দোলন এখনও টের পাচ্ছে না বর্তমান অবৈধ সরকার। যখন টের পাবে তখন আর পালাবার পথ পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো সিটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতে জিয়াউর রহমান ওয়ের নামফলক হস্তান্তর করা হয়।

Leave a comment