পানিপথে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে তিতুদহের সড়াবাড়িয়ার একজনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: আবারও পানিপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে আদমব্যাপারীর প্রতারণার শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদরের সড়াবাড়িয়া গ্রামের হারুনের। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের লোকজনের অভিযোগ। সন্তানের লাশ ফেরত না পেয়ে পরিবারজুড়ে চলছে শোকর মাতম। এলাকাবাসী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছে এ চক্রের সদস্যের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, গত ৫ সেপ্টেম্বর আদমব্যাপারীর খপ্পরের পড়ে পানিপথে মালয়েশিয়া পথে পাড়ি জমান চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের সড়াবাড়িয়া গ্রামের কদম আলীর ছেলে হারুন, কামাল, ছাদ্দাম, লিটন, আমদ আলীসহ ৬ জন। জন প্রতি ২ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত চুক্তি হয় আদম ব্যাপারীচক্রের সাথে। হারুনের ভাই জাহাঙ্গীর বলেন, কথিত আদম ব্যাপারী গোবরগাড়া গ্রামের খয়রাতি বাচ্চু ও তার ছেলে সেকেন্দারের নিকট ১ লাখ টাকা দেন দুলাভাই চোরকোল গ্রামের সিদ্দিকের মাধ্যমে। বাকি টাকা ভাই পৌঁছানোর পর দেয়া হবে বলে চুক্তি থাকে। এরই মাঝে হারুন যাওয়ার ২১ দিনের মাথায় বাড়িতে খবর আসে আদম ব্যাপারীরা তাকে মারধর করে সাগরে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে। হারুনের স্ত্রী পারুলা বেগম অপলোক দৃষ্টিতে স্বামীর লাশটি ফেরত পাওয়োর আশায় তাকিয়ে আছেন রাস্তার দিকে। ৪ বছরের মেয়ে হাফিজা জানে না তার বাবা কোথায় গেছে। আদৌয় কি বাড়ি ফিরে আসবে? সন্তানের মৃত্যুর খবরে বাড়ি ছেড়েছে দিনমুজুর বাবা কদম আলীও তার স্ত্রী।

প্রতিবেশিরা জানায়, পরের বাড়ি ধানভেনে চেয়েচিন্তে এনে হারুনের ৩ ভাই বড় হয়েছে। গ্রামের মধ্যে তারা ছিলো মাটির মানুষ। কষ্টলাঘব সংসারের সাচ্ছন্দ ফেরাতে ধারদেনা করে কথিত আদম ব্যাপারীর খপ্পরের পড়ে পানিপথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বার্মা হয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে টাকা পরিশোধ করতে দেরি হওয়ায় আদম ব্যাপারীরা তাকে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিয়েছে। এখন হারুনের লাশটি ফেরত পাওয়ার আশায় পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এ ঘটনার মাস দুয়েক আগে একই ইউনিয়নের খাড়াগোদা গ্রামের শাহাদত নামের একজনের একই পরিণতি হয়। যার লাশটি এখনও ফেরত পায়নি পরিবারের লোকজন। এদিকে এসমস্ত কথিত আদম ব্যাপারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছে এলাকাবাসী। এদেরকে আইনের আওতায় আনতে না পারলে আবারও হয়তো এ নির্মম পরিণতির শিকার হতে হবে।