জীবননগর বাজারে আঊশ ধানের প্রচুর আমাদানি

প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে হতাশ কৃষক

 

এম আর বাবু: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় এবার আঊশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলন হলেও বাজারে প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছেন না বলে ধানচাষিদের অভিমত। তাদের দাবি, আবাদের খরচ অনুপাতে ন্যায্যমূল্য মিলছে না বাজারে।

গতকাল বুধবার এখানে সাপ্তাহিক হাটে রেকর্ড পরিমাণ ধানের সরবরাহ ঘটেছে। পশ্চিমাঞ্চলের বৃহৎ এ হাটে এলাকাবাসী ইতঃপূর্বে আর এতো ধানের সরবরাহ হতে দেখেনি।                 উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ উপজেলায় এবার ৫ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে আঊশ ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ১ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল উফসি জাতের ধানচাষ হয়েছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামসুজ্জামান জানান, চাষকৃত জমি থেকে ২৮ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ধান পাওয়া গেছে। হাইব্রিডে হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ৬ মেট্রিক টন ও উফসি জাতের ধানে উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি ৫ মেট্রিক টন। উৎপাদিত ধানের মধ্যে রয়েছে লাল তীর ময়না, গুটি স্বর্ণ, ব্রি-২৮, এসিআই-১, এসিআই-২, কৃষাণ-২ ও রাজকুমার।

উপজেলার বাঁকা গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, গত হাটে তিনি উফসি জাতের টিয়া ও ময়না ধান প্রতি মণ ৭৬০ টাকা দরে বিক্রি করেছিলেন; কিন্তু গতকাল বাজারে ধান বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা দরে। মাত্র দু দিনের ব্যবধানে ধানের এ দরপতনে চরম লোকসানে পড়েছে কৃষক। উপজেলার বকুণ্ডিয়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম জানান, ধানের এ দরপতনের কারণে তারা চরম লোকসানের মুখে পড়েছে। এ অবস্থা বিরাজ করলে তারা এবার আউশ ধান চাষে লাভের মুখ দেখবে না বলে জানান। আড়তব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান জানান, তিনি তার জীবনদশাতে বাজারে এতো ধানের সরবরাহ হতে আর দেখেনি। এতো ধানের সরবরাহ দেখে মানুষের চোখ ছানাবড়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। জীবননগর বাসস্ট্যান্ডের চতুরপাশে জীবননগর-কালীগঞ্জ, জীবননগর-চুয়াডাঙ্গা, জীবননগর-জিন্নানগর ও জীবননগর-চ্যাংখালী সড়কের প্রায় দু কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গতকাল ছিলো ধানের সমারোহ। এ ৪টি সড়কে গরুরগাড়ি, ভ্যান, পাউয়ার ট্রিলার ও আলমসাধু-করিমনে বিক্রির জন্য আনা কেবল ধান আর ধানে জ্যাম থাকায় এ সকল সড়কে এ সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহন আটকা পড়ে।

উল্লেখ্য, লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে আঊশ চাষসহ অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ উপজেলায় এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।