দামুড়হুদায় শিশু অপহরণকারী ও তার দু ছেলেকে আদালতে সোপর্দ

স্বকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড : জেলহাজতে প্রেরণ

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার কোষাঘাটা থেকে অপহৃত শিশু আব্দুল্লাহকে অপহরণকারী মকবুল ও তার দু ছেলেকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপহরণকারী মকবুল আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। জবানবন্দি গ্রহণের পর আদালতের বিজ্ঞ বিচারক অপহরণকারী মকবুল ও তার বড় ছেলে জয়কে (১৬) জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন এবং ছোট ছেলে জনিকে (১৩) তার মায়ের জিম্মায় দেয়ার আদেশ প্রদান করেন। অপরদিকে অপহৃত শিশু আব্দুল্লাহকেও তার বাবার জিম্মায় দেয়ার আদেশ দেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তোবারেক আলী তাদেরকে আদালতের সোপর্দ করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ওই আদেশ দেন।

w

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে কোষাঘাটা গ্রামের আব্দুল খালেক ওরফে হ্যাবার ছেলে আব্দুল্লাহকে মুজিবনগর বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে কৌশলে অপহরণ করে তাকে লালপুরের দুরদরিয়া গ্রামে নিয়ে যায় মকবুল এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে জানার পর হ্যাবা তার একমাত্র ছেলেকে জীবিত ফিরে পেতে অপহরণকারী মকবুলের সাথে দেনদরবার অব্যহত রাখার পাশাপাশি থানা পুলিশের সহায়তায় মোবাইলফোন ট্র্যাকিঙের মাধ্যমে চালিয়ে যান উদ্ধার অভিযান। অভিযানের অংশ হিসেবে গত শনিবার বিকেল ৩টার দিকে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে এসআই তোবারেক আলী কনস্টেবল রবিউল সেলিম মিয়া, অপহৃত শিশুর চাচা সহিদুল ও চাচাতো ভাই আরিফকে সাথে নিয়ে মাইক্রোযোগে রাত ৯টার দিকে নাটোরের লালপুরে পৌছায়। প্রায় ৩০ কিলোমিটার পাঁয়ে হাটার পর দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী বাঘা থানার পার্শবর্তী ব্যাঙের বাজার নামক এলাকা থেকে অপহরণকারী মকবুল ও তার ছোট ছেলে জনিকে আটক করে পুলিশ। মকবুলের স্বীকারোক্তি মোতাবেক নাটোরের লালপুরের দুরদরিয়া গ্রামের মকবুলের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে অপহৃত শিশুকে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওই বাড়ি থেকেই মকবুলের বড় ছেলে জয়কেও আটক করে পুলিশ।

শিশু আব্দুল্লাহকে যেভাবে অপহরণ করা হয়- ঘটনার দিন শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে মকবুলের দু ছেলে জয় ও জনি সিপ দিয়ে মাছ ধরার অজুহাতে শিশু আব্দুল্লাহকে ডেকে নিয়ে যায় গ্রামের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে। তাকে ফুঁসলিয়ে ভালো ভালো খাবার কিনে দেয়ার কথা বলে নদীর ধার দিয়ে উজিরপুর পৌঁছায় এবং কাশেমুল উলুম কওমি মাদরাসার পাশ দিয়ে তারা পিচরোডে ওঠে। ওখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলো অপহরক মকবুল। তাদের সাথে নিয়ে ইজিবাইকে চেপে চুয়াডাঙ্গা পৌঁছায়। চুয়াডাঙ্গা থেকে বাস ও করিমনযোগে তাকে লালপুরে নেয়া হয়। লালপুর থেকে তাকে নেয়া হয় বাঘার পার্শ্ববর্তী মকবুলের নিজ গ্রাম দুরদরিয়া গ্রামে। সেখানেই তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিজের ছেলে পরিচয়ে আটকে রাখে অপহৃত শিশু আব্দুল্লাহকে।