জেলে যেতে পারেন খালেদা জিয়া : ইকোনমিস্ট

স্টাফ রিপোর্টার: জেলে যেতে পারেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর নারী খালেদা জিয়া। গত শুক্রবার বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার একটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট। তিনি নিজের মামলায় একজন বিচারক নিয়োগের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন। ইকোনমিস্ট জানায়, আদালতের রুলে এটি পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, খালেদা জিয়াকে বিচারের সম্মুখিন হতেই হবে। আর এ মামলায় জেলে যেতে পারেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর এ নারী।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অনেক বিষয় উঠে এসেছে বিশেষ করে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়, বিচারপতিদের অভিশংসন আইনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সব ক্ষমতা এখন শেখ হাসিনার হাতে। ইকোনমিস্ট আরও প্রকাশ করেছে, আদালতের এ আদেশ বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী নারীর (শেখ হাসিনা) আধিপত্যকে আরও শক্তিশালী করেছে। শেখ হাসিনা একটি বিতর্কিত নির্বাচনে জেতার আট মাস পর এমনটা হলো। যে নির্বাচন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি বর্জন করেছিলো।

প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু সহানুভূতিশীল ব্যক্তি যুক্তি দেন- শেখ হাসিনার শাসন ন্যায়সঙ্গত। এর কারণ দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সফলতা। ২০০৯ সালে তিনি ক্ষমতায় ফেরার পর  থেকে দারিদ্র্যের হার দ্রুত কমে এসেছে। ২০০৬ সালে খালেদা জিয়া সরকারের স্বজনপ্রীতি আর অযোগ্য শাসনের অবসান হলে দু নারীকে আটক করে সেনাবাহিনী। সে সময়ের তুলনায় অর্থনীতি এখন দ্বিগুন হয়েছে। অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনী আবিষ্কার করে দেশ চালানোটা তারা যতোটা উপভোগ্য মনে করেছিলো ততোটা নয়। তখন থেকে বাহিনীটি পেছনের আসনে অবস্থান নিয়েছে। এদিকে শেখ হাসিনার সরকার তাদের ক্ষমতা স্থায়ী করতে মিডিয়া সমালোচকদের বাকরোধ করা অব্যাহত রেখেছে। সংসদে তাদের দু-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। আর তাদের মিত্র এরশাদের দল জাতীয় পার্টি বিশ্বস্ত বিরোধী দল হিসেবেই আচরণ করছে।

ইকোনমিস্ট জানায়, আগামী সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া বিএনপির আর কোনো উপায় নেই। যদিও অর্থনীতির গতি সম্প্রতি কিছুটা শ্লথ হয়েছে। ব্যাংকিং খাত খারাপ অবস্থায় থাকার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতও টালমাটাল। তারপরও বড় কোনো সংকট আসন্ন বলে দৃশ্যমান নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। বিভিন্ন কারণে বিদেশি সরকারগুলো শেখ হাসিনার সাথেই কাজ করতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। বর্তমান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে  হাসিনা সরকারের তেমন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক না থাকলেও মোদি বাংলাদেশের সাথে দৃঢ় সম্পর্কের ব্যাপারে আগ্রহী। ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন সত্ত্বেও সবই শেখ হাসিনার অনুকূলে। কোনো কার্যকর বিরোধী দল না থাকায় তিনি খুব কম চাপে রয়েছেন। ২০১৯ সালে টানা তৃতীয়বার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম মনে করলে প্রধানমন্ত্রী নিজের শাসনকাল দীর্ঘায়িত করার আশায় মধ্যবর্তী নির্বাচনের ডাক দিতে পারেন। আপাতত একজন নারী (শেখ হাসিনা) অন্তহীন এ লড়াইয়ে জিতে চলেছেন।