ছেলেকে জীবিত ফিরে পেতে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

দামুড়হুদার কোষাঘাটা থেকে ৬ বছরের শিশু আব্দুল্লাহকে কৌশলে অপহরণ

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার কোষাঘাটা গ্রাম থেকে আব্দুল্লাহ (৬) নামের এক শিশুকে অপহরণ করেছে গ্রামেই দীর্ঘদিন থেকে বসবাসের ছলনায় ওত পেতে থাকা অজ্ঞাত পরিচয়ের মকবুল (৫৫) নামের এক অপহরক। তাকে অপহরণের পর মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করেছে ওই অপহরক। টাকা না দিয়ে যদি পুলিশকে জানানো হয় তাহলে ওই শিশুপত্রকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়েছে। অপহরক ওই শিশুপত্রকে নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছে বলে মোবাইলফোনে জানানো হয়েছে। গতকাল বেলা ১২টার দিকে শিশুপুত্র আব্দুল্লাহকে মুজিবনগর বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে কৌশলে অপহরণ করে।

জানা গেছে, মকবুল নামের অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি দু ছেলেকে নিয়ে প্রায় বছরখানেক আগে কোষাঘাটা গ্রামে আসে এবং তাদের জমিজমা নদী ভাঙনে বিলিন হয়ে গেছে বলে জানায়। কোষাঘাটায় বসবাসের জন্য শুরু করে কাকুতি-মিনতি। প্রথমে কেউ জায়গা দিতে না চাইলেও দু ছেলেকে নিয়ে পথে পথে ঘুরবে এই ভেবে শেষমেষ গ্রামে ঠাঁই মেলে তাদের। মকবুল তার দু ছেলে নিয়ে শুরু করে বসবাস। মকবুল কিছু জমি লিজ নিয়ে শুরু করে চাষাবাদ। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মকবুলের দু ছেলে গ্রামের আব্দুল খালেক ওরফে হ্যাবার বাড়িতে আসে এবং মুজিবনগর বেড়াতে যাবে বলে জানায়। এরপর বেলা ১২টার দিকে খালেক ওরফে হ্যাবার ছেলে কোষাঘাটা প্রাইমারি স্কুলের ১ম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহকে মুজিবনগর বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে কৌশলে অপহরণ করে। হ্যাবা মাঠ থেকে বাড়ি ফিরে ছেলেকে না পেয়ে শুরু করেন খোঁজাখুঁজি। এরই একপর্যায়ে হ্যাবার সন্দেহ হয় মকবুলের দু ছেলে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলেছিলো। হ্যাবা তখন ওই মকবুলের কাছে মোবাইল করে ছেলের কথা জিজ্ঞাসা করলে মকবুল বলে তোমার ছেলে আমাদের সাথেই আছে। টেনশন করোনা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবো। হ্যাবা তখনও বুঝতে পারেনি তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও মকবুল ফিরে না আসায় হ্যাবা পুনরায় মোবাইল করে মকবুলের কাছে। তখন মকবুল বলে তোর ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। আমি এখন ঢাকা বনানীতে অবস্থান করছি। ছেলেকে জীবিত ফিরে পেতে চাইলে থানা পুলিশ না করে কাউকে না জানিয়ে ৫ লাখ টাকা বিকাশ করে দে অথবা ঢাকায় চলে আই। হ্যাবা ছেলেকে হারিয়ে হয়ে পড়েছেন দিশেহারা। যেকোনো মূল্যে ছেলেকে ফিরে পেতে ওই মকবুলের সাথে শুরু করেন যোগাযোগ। সব শর্ত মেনে গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে মকবুলের সাথে মোবাইলফোনে পুনরায় কথা বলেন হ্যাবা।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিশুপুত্রকে জীবিত উদ্ধারসহ ওই অপহরকচক্রকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যেই পুলিশি জাল বিস্তার করা হয়েছে। দু একদিনের মধ্যেই শিশুপত্র আব্দুল্লাহকে উদ্ধারসহ ওই অপহরকচক্রকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি এলাকার সাধারণ জনগণের উদ্দেশে আরও বলেন, আপনারা পূর্ণাঙ্গ পরিচয় না জেনে অপরিচিত কাউকেই গ্রামে আশ্রয় দেবেন না এমনকি গ্রামে ঘোরাঘুরি করতে দেখলেও পুলিশকে খবর দেবেন।