সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে ত্রিধারায় বিভক্ত রায় : সাঈদীর ফাঁসি নয় আমৃত্যু কারাদণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার: ত্রি-ধারায় বিভক্ত রায়ে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাবাসের দণ্ড দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। জানা গেছে, আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারকের মধ্যে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি এসকে সিনহা ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আমৃত্যু কারাদণ্ডের পক্ষে আদেশ দেন। তবে তাদের সাথে ভিন্নমত পোষণ করে সাঈদী মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার মতো অপরাধ করেছেন বলে অভিমত দিয়েছেন বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। অন্যদিকে বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা আসামিকে খালাসের পক্ষে রায় দেন। পাঁচ জনের মধ্যে তিন বিচারক যেহেতু আমৃত্যু কারাদণ্ডের পক্ষে অভিমত দিয়েছেন সেহেতু আপিল বিভাগের বিধি অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠের মতোই চূড়ান্ত।

সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকদের দেয়া রায়ে বলা হয়েছে, স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সাঈদী কারাভোগ করবেন। মুক্তিযুদ্ধকালে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণ, তিন নারীকে নির্যাতন ও ধর্ষণ এবং বিশাবালীকে হত্যার দায়ে এ দণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া ইব্রাহিম কুট্টিকে হত্যায় সহায়তার দায়ে ১২ বছরের এবং এক মুক্তিযোদ্ধাকে নির্যাতন ও বাড়ি লুণ্ঠনের দায়ে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের কথাও জানিয়েছে আপিল বিভাগ। এর আগে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলো।

গতকাল বুধবার আপিল বিভাগের দেয়া রায়ে সন্তুষ্ট নয় রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষ। অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাড. মাহবুবে আলম বলেছেন, ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডের যে রায় দিয়েছিলো তা বহাল থাকবে এটাই প্রত্যাশা ছিলো। কিন্তু সেটা থাকেনি। এ কারণে আমার খুব খারাপ লাগছে। আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এ রায়ে আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হবে।

এদিকে রায় ঘোষণার পর ‘ন্যায় বিচার না পাওয়ার প্রতিবাদে’ গতকাল দুপুরে জামায়াতে ইসলামী সারাদেশে আজ বৃহস্পতিবার ও আগামী রোববার ২৪ ঘণ্টা করে মোট ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে। অন্যদিকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাবাসের এই রায় প্রত্যাখ্যান করেছে শাহবাগে অবস্থানরত গণজাগরণ মঞ্চ। রায়ের প্রতিবাদে তারা জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছে।

৪৯ কার্যদিবসব্যাপি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর এবং রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি শেষে গত ১৬ এপ্রিল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছিলো আপিল বিভাগ। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর গতকাল সকাল ১০টা সাত মিনিটে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন আপিল বিভাগের রায় ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ফৌজদারি আপিল নম্বর-৩৯/২০১৩ (সাঈদী) এবং ফৌজদারি আপিল নম্বর-৪০/২০১৩ (সরকার)-এর আংশিক মঞ্জুর করা হয়েছে। এরপর সাঈদীর বিরুদ্ধে ৮টি মানবতাবিরোধী অভিযোগের ওপর দণ্ড ঘোষণা করেন তিনি। এর মধ্যে তিনটি অভিযোগ থেকে সাঈদীকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ঘোষণা শুরুর ৪ মিনিটের মধ্যেই রায় পড়া শেষ করেন প্রধান বিচারপতি। আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়, ১০ নম্বর অভিযোগে (বিশাবালী হত্যা), ১৬ নম্বর অভিযোগে (তিন বোনকে অপহরণ করে পাকিস্তানি ক্যাম্পে আটকে রেখে ধর্ষণ) এবং ১৯ নম্বর অভিযোগে (প্রভাব খাটিয়ে পারেরহাট ও অন্য গ্রামের ১০০-১৫০ জন হিন্দুকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা ও নামাজ পড়তে বাধ্য করা) সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হলো। এর মধ্যে ১০ নম্বর অভিযোগে সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলো যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করলেও এ জন্য কোনো দণ্ড দেয়নি ট্রাইব্যুনাল। ৮ নম্বর অভিযোগে (ইব্রাহিম কুট্টিকে হত্যা) ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিলেও সর্বোচ্চ আদালত সাঈদীর আপিল আংশিক মঞ্জুর করে এ অভিযোগের ক্ষেত্রে তাকে ১২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে। ৭ নম্বর অভিযোগে (মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম সেলিমকে নির্যাতন ও বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ) আপিল বিভাগ সাঈদীকে ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে। এই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করলেও ট্রাইব্যুনাল সে সময় তাকে কোনো দণ্ড দেয়নি।

এছাড়া আপিল বিভাগ রায়ে ৬ নম্বর অভিযোগ (মাখনলাল সাহার বাড়ি থেকে ২২ সের স্বর্ণ লুট), ১১ নম্বর অভিযোগ (মাহবুবুল আলম হাওলাদারের বাড়িতে হামলা ও লুণ্ঠন) এবং ১৪ নম্বর অভিযোগ (হোগলাবুনিয়ার হিন্দুপাড়ায় শেফালী ঘরামিকে ধর্ষণ ও বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ) থেকে সাঈদীকে অব্যাহতি দিয়েছে।

গতকাল সকাল ১০টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের আরও চার বিচারপতি এজলাসে আসেন। এ সময় আইনজীবী, সাংবাদিক ও বিচারপ্রার্থীদের ভিড়ে সেখানে তিল ধারণের ঠাঁই ছিলো না। এজলাসে আসন গ্রহণের দু মিনিট পর রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পাঠ শুরু করেন প্রধান বিচারপতি। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নেয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আদালতের প্রতিটি প্রবেশ পথে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর থেকে হাইকোর্ট মাজার গেট পর্যন্ত এলাকায়ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পরিচয়পত্র প্রদর্শন ছাড়া আদালতে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।

আমৃত্যু কারাদণ্ড : তিন অভিযোগের বিস্তারিত: ১০ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২ জুন সকাল ১০টার দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে সশস্ত্র সহযোগীরা ইন্দুরকানি এলাকার উমেদপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ায় হানা দিয়ে ২৫টি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসব বাড়ির মালিকদের মধ্যে রয়েছেন চিত্তরঞ্জন তালুকদার, হরেণ ঠাকুর, অনিল, বিশাবালী, সুকাবালী, সতীশ বালা। সাঈদীর ইন্ধনে তার সহযোগীরা বিশাবালীকে নারকেল গাছের সাথেঙ্গে বেঁধে গুলি করে হত্যা করে।

১৬ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, সাঈদীর নেতৃত্বে ১০-১২ জনের রাজাকার দল পারেরহাট বন্দরের গৌরাঙ্গ সাহার বাড়ি থেকে তার তিন বোন মহামায়া, অন্ন রানী ও কমলা রানীকে ধরে পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে তিন দিন ধর্ষণের পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। ১৯ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, সাঈদী প্রভাব খাটিয়ে পারেরহাট ও অন্য গ্রামের ১০০-১৫০ জন হিন্দুকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা দেন। তাদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে বাধ্য করা হতো।

যে দু অভিযোগে ১০ ও ১২ বছরের দণ্ড: ৮ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ মে বেলা ৩টায় সাঈদীর নেতৃত্বে তার সাঙ্গপাঙ্গরা পাকিস্তানি বাহিনীর সহায়তায় পিরোজপুর সদর থানার চিতলিয়া গ্রামের মানিক পসারির বাড়িতে হানা দিয়ে তার ভাই মফিজ উদ্দিন ও ইব্রাহিম কুট্টি এবং দু ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যান। সেনা ক্যাম্প থেকে ফেরার পথে সাঈদীর প্ররোচনায় ইব্রাহিম কুট্টিকে হত্যা করে লাশ সেতুর কাছে ফেলে দেয়া হয়। পারেরহাট বন্দরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘরে সাঈদী ও অন্যরা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

৭ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ৮ মে বেলা দেড়টায় সাঈদী তার সশস্ত্র সাঙ্গপাঙ্গ ও পাকিস্তানি সেনাদের সাথে নিয়ে সদর থানার ভাদুরিয়া গ্রামে নূরুল ইসলাম খানের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম সেলিমের বাড়িতে হানা দেন। সেখানে নূরুল ইসলাম খানকে আওয়ামী লীগ নেতা হিসাবে চিনিয়ে দেন সাঈদী।

যে তিন অভিযোগ থেকে খালাস: ৬ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ৭ মে সাঈদীর নেতৃত্বে শান্তি কমিটির একদল সদস্য পিরোজপুর সদরের পারেরহাটে গিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের ওই এলাকায় স্বাগত জানান। তাদের পারেরহাট বাজারে নিয়ে এসে সেখানকার আওয়ামী লীগ নেতা, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষদের বাড়ি-ঘর ও দোকান চিনিয়ে দেন সাঈদী। পরে সাঈদী অন্যদের সাথে এসব বাড়ি ও দোকানে হানা দিয়ে মূল্যবান সম্পদ লুট করেন। মুকুন্দ লাল সাহার দোকান থেকে স্বর্ণ ও রুপা লুট করেন সাঈদী।

১১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ২ জুন সাঈদীর নেতৃত্বে শান্তি কমিটির সদস্যরা ইন্দুরকানির টেংরাখালী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল আলম হাওলাদারের বাড়িতে পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে যান। তার বড় ভাই আবদুল মজিদ হাওলাদারকে ধরে নিয়ে সাঈদী নির্যাতন করেন। এরপর সাঈদী নগদ টাকা, অলংকার ও মূল্যবান জিনিস লুট করে নিয়ে যান। ১৪ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে ৫০-৬০ জনের একটি রাজাকার বাহিনী হোগলাবুনিয়ার হিন্দুপাড়ায় যায়। রাজাকারদের আগমন দেখে গ্রামের অধিকাংশ হিন্দু নারী পালিয়ে যান। কিন্তু মধুসূদন ঘরামীর স্ত্রী শেফালী ঘর থেকে বের হতে পারেননি। তখন সাঈদীর নেতৃত্বে রাজাকাররা তাকে ধর্ষণ করে। এই তিন অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল সাঈদীকে দোষী সাব্যস্ত করলেও কোন সাজা দেয়নি। তবে আপিল বিভাগ সাঈদীকে এই তিন অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। এছাড়া সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনা ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৯, ১২, ১৩, ১৫, ১৭, ১৮ ও ২০ নম্বর অভিযোগ থেকে ট্রাইব্যুনাল অব্যাহতি দিয়েছিলো।

কামারুজ্জামানের আপিলের রায় যেকোনো দিন: মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের করা আপিলের রায় যেকোনো দিন ঘোষণা করা হবে। গতকাল বুধবার উভয় পক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ রাখেন। আপিল বিভাগের রায়ে কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকবে বলে আশা করছেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী এসএম শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ তাদের সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে কোনো অভিযোগ নির্ভরযোগ্যভাবে প্রমাণ করতে পারেনি। আপিলের রায়ে কামারুজ্জামান খালাস পাবেন বলে আশা করেন তিনি।

একাত্তরে আল বদরের ময়মনসিংহ জেলা শাখা প্রধান কামারুজ্জামানকে গত বছরের ৯ মে মৃত্যুদণ্ড দেয় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে গত বছরের ৬ জুন আপিল করেন কামারুজ্জামান। গত ৫ জুন এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর কামারুজ্জামানের পক্ষে আপিলে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন তার আইনজীবী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বৃহস্পতিবার শুনানি শেষ করেন। ট্রাইব্যুনাল-২-এর রায়ে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনীত সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। শেরপুরের সোহাগপুরে ১৬৪ জন নিরস্ত্র নাগরিককে হত্যা ও নারী ধর্ষণ এবং গোলাম মোস্তফা নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এছাড়া বদিউজ্জামানকে অপহরণ করে নির্যাতন এবং হত্যা, ব্রহ্মপুত্র পাড়ে অপর ছয় ব্যক্তিকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার দায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। অধ্যক্ষ সৈয়দ আবদুল হান্নান নামে এক ব্যক্তিকে নির্যাতনের অপর ঘটনায় কামারুজ্জামানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। লিয়াকতসহ ৮ জনকে হত্যা এবং অপর আরেকটি ঘটনায় টুনু নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে না পারায় এ দুটি অভিযোগ থেকে তাকে  খালাস দেয়া হয়। রায়ে বলা হয়েছে, যেহেতু কামারুজ্জামানকে দুটি অভিযোগে সর্বোচ্চ দণ্ড (মৃত্যুদণ্ড) দেয়া হয়েছে সেহেতু অন্যান্য প্রমাণিত অপরাধে দণ্ড নির্ধারণ করা হলেও সর্বোচ্চ শাস্তি বহাল থাকলে সেগুলো আর কার্যকর হবে না।

২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়। গত বছরের ৪ জুন এই ট্রাইব্যুনাল কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ গঠন করে।