বাল্যবিয়ের শাস্তি বাড়ছে

 

স্টাফ রিপোর্টার: বাল্যবিয়ে বন্ধের জন্য সর্বোচ্চ দু বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৪’র খসড়া মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন লাভ করেছে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এসব অনুমোদন দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা প্রেসব্রিফিঙে বলেন, মোবাইল অপারেটর কর্তৃক সিম বা রিমকার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার বিনিময়ে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থের ওপর এক শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। অর্থাৎ মোবাইলফোনে কথা বলা ও অন্যান্য সেবার জন্য প্রতি ১শ টাকা খরচ হলে এক টাকা সারচার্জ দিতে হবে। এ সারচার্জ বাবদ বছরে ১৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে। আর এ অর্থ সরকারের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। তিনি বলেন, যে সারচার্জ আরোপ করা হচ্ছে, সেটি পরিশোধ করবে মোবাইল অপারেটররা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, হিসাব করে দেখা গেছে, একজন সিম ব্যবহারকারী মাসে গড়ে ২শ টাকা খরচ করেন। এ হিসাবে মাসে গড়ে দু টাকা সারচার্জ দিতে হবে।

বাল্যবিয়ে আইন প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইনের খসড়া অনুযায়ী, ছেলের বয়স ২১ ও মেয়ের বয়স ১৮ বছরের কম হলে তা বাল্যবিয়ে এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে। তবে মন্ত্রিসভা বাস্তবতার প্রেক্ষিতে বিদ্যমান বয়স কমানো যায় কি-না তা পর্যালোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে অনুশাসন দিয়েছে।

বাল্যবিয়ে প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিবাহকারী, বিয়ে পরিচালনাকারী ও অভিভাবককে উল্লিখিত শাস্তি দেয়া যাবে। তবে নারীদের ক্ষেত্রে কারাদণ্ড প্রযোজ্য হবে না; জরিমানার বিধান অভিন্ন থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তাত্ক্ষণিভাবে এ ধরনের বিয়ে বন্ধ করে দোষীদের সাজা দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে আইনের খসড়ায়। তবে বিয়ে বাতিলের বিষয় থাকলে তা করবেন পারিবারিক আদালত। তিনি বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে তৈরি ১৯২৯ সালের আইনে ১ মাসের জেল ১ হাজার জরিমানার বিধান ছিলো। পরে তা সংশোধন করে ১ মাস জেল ও ১০ হাজার জরিমানার বিধান করা হয়। তারপরও বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটায় শাস্তির পরিমাণ বাড়িয়ে নতুন আইনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাল্যবিয়ে রোধে সরকার সুশীল সমাজ, এনজিও প্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন করবে।

কাস্টমস আইন-২০১৪’র খসড়া এবং বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন-২০১৪’ খসড়া যাচাই বাছাইয়ের পর ভেটিং সাপেক্ষে মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে খসড়া দুটি আইন আকারে পাসের জন্য সংসদে যাবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

এদিকে গত ১০ আগস্ট মিয়ানমারের নেপিতোতে অনুষ্ঠিত আসিয়ান রিজিওনাল ফোরাম (এআরএফ)’র ২১তম মন্ত্রি পর্যায়ের সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অংশগ্রহণ এবং গত ১০-১১ জুলাই নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফোরামে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণ সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়।