চুয়াডাঙ্গার দেশ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ : গলার টনসিল অপারেশন করার পর রোগীর মৃত্যু

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দেশ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় গৃহবধূর গলায় টনসিলের অপারেশন করতে গিয়ে মৃত্য হয়েছে। সকালে সুস্থ গৃহবধূ শ্বশুরের সাথে চুয়াডাঙ্গায় যান। সকাল ৮টার দিকে গলার টনসিল অপারেশন করার কথা বলে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে দেড়ঘণ্টা ধরে অপারেশন করা হয়। রোগীর মৃত্যুর পর নাটক সাজিয়ে রোগীর অবস্থা গুরুতর বলে ক্লিনিক মালিক নিজেই অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন। কুষ্টিয়া নেয়ার পথে মুন্সিগঞ্জ বাজারে গৃহবধূর সাথে থাকা পিতা ও শ্বশুরের নিকট ক্লিনিক মালিক ও চিকিৎসকের নাটকের জট খোলে। লাশ নেয়া হয় গ্রামে। গ্রামজুড়ে চলতে থাকে শোকের মাতম। ক্লিনিক মালিক ও চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রোগীর স্বজনরা।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে আলমডাঙ্গার জুগিরহুদা গ্রামের আজাদের স্ত্রী সাথী (৩০) দীর্ঘদিন ধরে গলায় টনসিলের ব্যথায় ভুগছিলেন। গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গার দেশ ক্লিনিকে অপারেশনের কথা ছিলো। গতকাল সকালে গলায় টনসিলের ব্যথা নিয়ে চুয়াডাঙ্গার দেশ ক্লিনিকে অপারেশন করতে যান। চিকিৎসক ওটিতে দেড়ঘণ্টা ধরে অপারেশন করেন। হঠাত ক্লিনিক মালিক আশা ও শান্ত তড়িঘড়ি করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে কুষ্টিয়া নেয়ার কথা বলেন। অ্যাম্বুলেন্সযোগে মুন্সিগঞ্জ বাজারে পৌঁছুলে রোগীর সাথে থাকা লোকজনদের ভুল ভাঙে। রোগী অপারেশন থিয়েটারে মারা গেছে, নিজেদের বাঁচাতে এ নাটক করা হয়েছে বলে রোগীর লোকজন অভিযোগ করে জানান।

এ ব্যাপারে গৃহবধূর শ্বশুর অভিযোগ করেছেন, গতকাল সকাল ৮টার দিকে সাথীর গলায় টনসিলের অপারেশন করা কথা ছিলো। সকাল ৭টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে চুয়াডাঙ্গা দেশ ক্লিনিকে গিয়ে ডা. শফিকুল ইসলামের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। সকাল ৮টা ১০ মিনিটের সময় তিনি আসেন। অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন করতে ঢোকেন। প্রায় দেড়ঘণ্টা পর অপারেশন খিয়েটার থেকে ঘেমে বের হন ডা. শফিকুল ইসলাম। ক্লিনিক মালিক আশা ও শান্ত তড়িঘড়ি করে নিজেরাই একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে কুষ্টিয়াতে যাওয়ার কথা বলেন। পথিমধ্যে মুন্সিগঞ্জ বাজারে এলে আমাদের ভুল ভাঙে। স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায় সে অনেক আগেই মারা গেছে। হাত-পা সব ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। লাশ জুগিরহুদার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রামজুড়ে চলতে থাকে শোকের মাতম। সাথীর শ্বশুর ও পিতা ডা. শফিকুল ও ক্লিনিক মালিকের বিচারের দাবি জানালেও এক শ্রেণির লোকজন বলতে থাকে আল্লার মাল আল্লায় নিয়ে গেছে ডাক্তার ওসিলা মাত্র। গ্রামজুড়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্লিনিক মালিক ও ভুয়া চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

অপারেশনের রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে নাক-কান গলা সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, অপারেশনে ত্রুটি ছিলো না। রক্তক্ষরণও ছিলো না। অজ্ঞান করেন ডা. গোলাম মোর্শেদ ডালিম। অপারেশনের পর রোগীর জ্ঞান ফেরাতে পারেননি। এ বিষয়ে, ডা. ডালিমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। তার মোবাইলফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।