ঝুলে থাকলো পিস্টোরিয়াসের ভাগ্য

মাথাভাঙ্গা মনিটর: বান্ধবী রিভা স্টিনক্যাম্পকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও ‘নরহত্যার’ দায়ে শাস্তি হবে কি না- তা জানতে আরো একটি রাত অপেক্ষায় কাটাতে হচ্ছে অস্কার পিস্টোরিয়াসকে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিবন্ধী এ দৌড়বিদের বিরুদ্ধে মামলার চূড়ান্ত রায় জানা যাবে শুক্রবার, যাতে বড় ধরণের শাস্তি আসতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রিটোরিয়ায় বিচারক থোকোজিলে মাসিপা রায়ের প্রথম অংশ পড়ে সবাইকে অবাক করে দিয়ে আদালত মুলতবি করে দেন। বিচারক বলেন, পিস্টোরিয়াসের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ আনা হলেও রাষ্ট্রপক্ষ তা প্রমাণ করতে পারেনি। তবে স্টিনক্যাম্পকে ‘অনিচ্ছাকৃত’ হত্যার দয়ে পিস্টোরিয়াসের সাজা হবে কি না তা জানা যাবে শুক্রবার। ‘ব্লেড রানার’ নামে পরিচিত ২৭ বছর বয়সী পিস্টোরিয়াসের দাবি, বাড়িতে কেউ ঢুকেছে ভেবে আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালিয়েছিলেন তিনি। তার গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান বাথরুমে থাকা মডেল তারকা স্টিনক্যাম্প, যিনি সে সময় বাথরুমের ভেতরে ছিলেন।
পিস্টোরিয়াসের ছোড়া গুলি স্টিনক্যাম্পের মাথা, বাহু আর নিতম্বে লাগে। পরে বাথরুম থেকে পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। বিচারক বলেন, বাথরুমের ভেতরে কে আছে তা দরজার এপাশ থেকে জানা পিস্টোরিয়াসের পক্ষে সম্ভব ছিলো না। সুতরাং তিনি পরিকল্পিতভাবে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন- এমনটা সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। তবে তিনি উল্লেখ করেন, পিস্টোরিয়াসের অবহেলার জন্যই মৃত্যু হয়েছে স্টিনক্যাম্পের। বিচারক বলেন, ২০১৩ সালের ভ্যালেন্টাইন্স দিবসে এ ঘটনায় বাথরুমে শব্দ পেয়ে পিস্টোরিয়াস সাহায্যের জন্য পুলিশ বা নিরাপত্তা কর্মীদের খবর দিতে পারতেন অথবা প্রতিবেশীদের সহায়তার জন্য চিৎকার করতে পারতেন। তিনি তা না করে দরজার ওপাশে কেউ আছে জেনেই গুলি চালিয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, অবহেলার জন্য একজনের প্রাণ যাওয়ায় বড় ধরণের শাস্তিও পেতে পারেন পিস্টোরিয়াস। রায় পড়ার সময় মাধেমধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে পিস্টোরিয়াসকে।

প্রথম অঙ্গহীন অ্যাথলেট হিসেবে লন্ডনে মূল অলিম্পিকে অংশ নেন পিস্টোরিয়াস। বিশ্বের ‘পা বিহীন দ্রুততম মানব’ হিসেবে পরিচিত স্টোরিয়াস এর আগে ২০০৪ সালে এথেন্স প্যারালিম্পিকে ২০০ মিটারে সোনা ও ১০০ মিটারে ব্রোঞ্জ পান। চার বছর পর বেইজিং প্যারালিম্পিকে ১০০, ২০০ ও ৪০০ মিটারে এবং ২০১২ লন্ডন প্যারালিম্পিকেও ২০০ ও ৪x১০০ মিটার রিলেতে সোনা জেতেন তিনি। তবে ২৬ বয়সী পিস্টোরিয়াস সবচেয়ে চমক দেখান লন্ডনে মূল অলিম্পিকে। ৪০০ মিটার দৌড়ে পদক জিততে না পারলেও ৫১ প্রতিযোগীর মধ্যে ১৬তম হন তিনি।