ঝিনাইদহ সদর থানায় বৃদ্ধা এক নারীকে ২৪ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন : অভিযোগ

 

 

ছিনতাই মামলার আসামি ছেলেকে হাজির না করলে মাকে ছাড়ছে না পুলিশ

ঝিনাইদহ অফিস: গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ঝিনাইদহ সদর থানার সামনে এক নারীর চিৎকার করা কান্নার শব্দ। ওরা আমার মাকে আটকে রেখেছে। তাকে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। হৃদরোগে আক্রান্ত বৃদ্ধা মা রাহেলা খাতুন (৫৫) যে কোনো সময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। ঝিনাইদহ শহরের একটি ছিনতাই মামলায় ছোট ভাই জড়িত সন্দেহে বাড়িতে কাউকে না পেয়ে পুলিশ তার মাকে আটক করেছে।

কান্না জড়িতকণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন রাহেলা খাতুনের একমাত্র মেয়ে পারভীন খাতুন। মাকে থানার ভেতর দেখে বাইরে বের হওয়ার সময় এভাবে কান্নায় ভেঙে পড়েন পারভীন। আটক রাহেলা খাতুন ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চননগরপাড়ার পঙ্গু আসলাম হোসেনের স্ত্রী। গত বুধবার রাত ৮টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই শাহারিয়ার রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।

পারভীন খাতুন আরো জানান, ঝিনাইদহ-মাগুরা সড়কের ঝিনাইদহ শহরের ধোপাঘাটা ব্রিজের পাশে গত সোমবার এক নারীর কাছ থেকে নগদ ১৯ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পুলিশ এই ঘটনায় তার ছোট ভাই আমিরুল ইসলামকে সন্দেহ করে খুঁজছে। বুধবার রাতে তাদের বাড়ি থেকে মা রাহেলা খাতুনকে আটক করে নিয়ে গেছে। এখন বলছে, ছেলেকে হাজির না করলে মাকে ছাড়া হবে না। তারা পরিবারের লোকজন থানায় গেলে মা রাহেলা খাতুন কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত বৃদ্ধা ওই নারীকে থানার মধ্যে মেঝেতে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি আরো জানান, পুলিশের ভয়ে পিতা আসলাম হোসেন ও ছোট ভাই দশম শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলাম বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে বৃদ্ধা মহিলার ছবি তুলতে চাইলে সাংবাদিকদের বাধা দেয় পুলিশ। তবে এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার উপপরিদর্শক শাহরিয়ার রহমান সাংবাদিকদের জানান, রাহেলার ছেলে এই ছিনতাই ঘটনার সাথে জড়িত। কিন্তু ছেলে আমিরুলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে মাকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তাকে আটক দেখানো হয়নি।

থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাবুদ্দিন আজাদ জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত বাড়িতে বিষয়টিকে খারাপভাবে নেয়ার কোনো কারণ নেই। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইতিবাচক তথ্য পাওয়া গেছে। আরো জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হবে।