চিরতরে চলে গেলেন ফিরোজা বেগম

স্টাফ রিপোর্টার: নজরুল সঙ্গীতশিল্পী ফিরোজা বেগম আর নেই। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টা ২৮ মিনিটে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ফিরোজা বেগমের হৃদযন্ত্র ও কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিলো না। পাশাপাশি তার শরীরে জন্ডিস ধরা পড়ে। তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য সব ধরনের চেষ্টাই চালান চিকিৎসকেরা। গত রাত আটটা ২৮ মিনিটে সবাইকে কাঁদিয়ে তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। আজ বুধবার ফিরোজা বেগমকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

গুণী এ নজরুল সঙ্গীতশিল্পীর জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৮ জুলাই, ফরিদপুরের এক সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে। তার বাবা খান বাহাদুর মোহাম্মদ ইসমাইল এবং মা বেগম কওকাবুন্নেসা। স্বামী কমল দাশগুপ্ত। ফিরোজা বেগমের তিন সন্তান তাহসিন আহমেদ, হামিন আহমেদ ও শাফিন আহমেদ। মাত্র ১২ বছর বয়সে ইসলামি গান নিয়ে ফিরোজা বেগমের প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করেছিলো বিখ্যাত গ্রামোফোন কোম্পানি এইচএমভি। ছেলে শাফিন আহমেদও গুণী সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে নিজেকে মেলে ধরে দেশ জুড়ে প্রশংসিত।

ফিরোজা বেগম পেয়েছেন স্বয়ং কবি কাজী নজরুল ইসলামের দুর্লভ সান্নিধ্য। পেয়েছেন অগণন পুরস্কার ও সম্মাননা। চেষ্টা, নিষ্ঠা আর সততার গুণে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন নজরুল সঙ্গীতের সম্রাজ্ঞীর আসনে। নজরুল সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশে-বিদেশে পেয়েছেন নানা পুরস্কার। স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র পুরস্কার, সত্যজিৎ রায় পুরস্কার, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী স্বর্ণপদক, সেরা নজরুল সঙ্গীতশিল্পী পুরস্কার (টানা বেশ কয়েকবার), নজরুল আকাদেমি পদক, চুরুলিয়া স্বর্ণপদক, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডিলিট, এমন আরও অগণন পুরস্কার ও সম্মাননা। এছাড়াও জাপানের অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিবিএস থেকে পেয়েছেন গোল্ড ডিস্ক। ফিরোজা বেগম ২০১১ সালে পেয়েছেন মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার।