মেহেরপুর মদনাডাঙ্গায়ঝাঁড়ফুঁক কাটাছেঁড়ার সময় পুলিশ হাজির
মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর জেলা সদরের মদনাডাঙ্গা থেকে রজব আলী (৪৫) নামের এক ওঁঝাকে (কবিরাজ) আটক করেছে পুলিশ। সাপ আতঙ্ক ছড়িয়ে চিকিৎসার নামে প্রতারণার অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের এএসআই উত্তম কুমার তাকে নতুন মদনাডাঙ্গা গ্রাম থেকে আটক করেন। এ পদক্ষেপকে এলাকার সচেতনমহল অভিন্দন জানিয়েছে।
এএসআই উত্তম কুমার সাংবাদিকদের জানান, গতকাল দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের নতুন মদনাডাঙ্গা গ্রামের সর্পদংশনের কথিত রোগীকে চিকিৎসা (ঝাঁড়ফুঁক) দেয়ার সময় তাকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। আটক রজব আলী জেলার গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে। গ্রামে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করার মুখ্যম সময়ে ওঁঝা রজব আলী মদনাডাঙ্গা গ্রামে তার শ্বশুর মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়িতে অবস্থান নিয়ে বাড়তি কিছু টাকা আয় করে যাচ্ছিলেন। পুলিশ মদনাডাঙ্গা গ্রামের অন্যান্য ওঁঝাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে তাদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার থেকে মেহেরপুর সদর উপজেলার পুরাতন মদনাডাঙ্গা গ্রামে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাপের দেখা না মিললেও কিংবা বিষের জ্বালা ছাড়ায় প্রতিদিন ১০/১২ জন করে ওই গ্রামের শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও গৃহবধূ স্থানীয় ওঁঝাদের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছে। ওঁঝারা কৌশলে সাপ আতঙ্ক সৃষ্টি করে গ্রামের সাধারণ মানুষের সাপে কাটা রোগী বানিয়ে ঝাঁড়ফুঁক দিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এতে সাহায্য করছে এক শ্রেণির কিছু দালাল। এনিয়ে গত এক সপ্তায় ওই গ্রামের প্রায় ৭০ জন মানুষের চিকিৎসা দিয়েছেন গ্রামের ওঁঝারা। ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হলে গত মঙ্গলবার মেহেরপুরের এমপি প্রফেসর ফরহাদ হোসেন, জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হেমায়েত হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজনীন সুলতানা এবং মেহেরপুরের একটি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারা অকারণে আতঙ্কিত না হতে পরামর্শ দেন। ওঁঝার ভুল চিকিৎসার ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সাপে কাটা রোগীর বিষ ধ্বংস করার জন্য পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন হাসপাতালে মজুত আছে। এরপরও ওঁঝাদের পক্ষে কিছু লোকজন শহরে আসেন এবং ওঁঝার পক্ষ নিয়ে হাসপাতাল ঘেরাও করেন।