চুয়াডাঙ্গার গাড়াবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পিটুনিতে শিক্ষার্থীর ভেঙেছে হাত

 

 

তদন্তে মিলেছে সত্যতা : উঠে এসেছে নানা অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: শ্রেণিকক্ষে শিশু শিক্ষার্থীকে মেরে হাত ভেঙে দেয়ার ঘটনা সরেজমিন তদন্ত করতে গিয়ে উপজেলা সহকারী দুজন শিক্ষা অফিসার গাড়াবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শুনলেন নানা অভিযোগ। শিক্ষক শরিফুজ্জামান স্বপন ছাত্র শামীমকে কীভাবে মেরে হাত ভেঙেছেন তার বর্ণনা যেমন শুনেছেন, তেমনই প্রধান শিক্ষক শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে দোকান থেকে পান আনানোসহ মাঠ থেকে শাক তোলানোর অভিযোগও পেয়েছেন তদন্ত টিমের দু সদস্য।

গত সোমবার বিদ্যালয়ের এক ছাত্রের হাত ভাঙে। শিক্ষক মেরে তার হাত ভেঙেছেন বলে অভিযোগ উত্থাপন হয়। এরই প্রেক্ষিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার এসএম জয়নুল ইসলাম ও শামীম সুলতান গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন তদন্তে যান। এ সময় উত্থাপিত অভিযোগের সত্যতা মেলে। তাৎক্ষণিকভাবে উত্থাপিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবশ্য ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে দোকান থেকে পান আনানোর কথা স্বীকার করলেও তিনি মাঠ থেকে শাক তোলানোর বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন। শিক্ষকের পিটুনিতে হাত ভাঙা ছাত্র শামীমের পিতা-মাতা সহকারী দু শিক্ষা অফিসারের সামনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেছেন, আমরা দরিদ্র। গ্রামের অনেকেই আছে যাদের জমি আছে তাদের ছেলেমেয়েরাও উপবৃত্তি পায়, অথচ আমি ভ্যানচালক হয়েও আমার দু ছেলেমেয়ে স্কুলে পড়িয়ে উপবৃত্তি পাচ্ছি না। এ অভিযোগ শুনে দু শিক্ষা অফিসার অভিন্ন ভাষায় বলেন, দরিদ্রদের জন্যই উপবৃত্তি। শামীম ও তার বোন একই বিদ্যালয়ে পড়ছে। পিতা দরিদ্র। অথচ উপবৃত্তির টাকা দেয়া হয় না কেন? প্রধান শিক্ষক মাথা নিচু করে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। বিদ্যালয়ের ছাত্রকে মেরে হাত ভাঙা হলো কেন? প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে বেত নিয়ে প্রবেশ করতে বারণ করেছি। এরপরও ঘটে গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক শরিফুজ্জামান স্বপন অবশ্য ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করে বলেন, আর এরকম ভুল হবে না। তদন্তের সময় তিনি ভুল স্বীকার করলেও তিনি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীকে মারার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, মারতে গেলে ছাত্র শামীম সরে যায়। বেঞ্চে চোট লাগে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গাড়াবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি টিউবওয়েলও সচল ছিলো না। গতকাল মঙ্গলবার সকালেই একটি টিউবওয়েল মেরামত করা হয়। টয়লেট থাকলেও ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহারের সুযোগ নেই। কারণ পরিষ্কার টয়লেটে তালা মারা। এসব বর্ণনা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানাতে গিয়ে ব্লাকবোর্ডে লেখেন, আমরা টয়লেট চাই। অবশ্য দাবি জানানো স্লোগানটাও ছাত্রছাত্রীরা সঠিকভাবে লিখতে পারেনি। এর মধ্য দিয়েই ফুটে ওঠে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান।