জয়রামপুর স্টেশনের অদূরে ট্রেনে কাটাপড়া হাঁস দেখতে গিয়ে বিপত্তি

 

 

সিগন্যাল পিলারে ধাক্কা : ট্রেনযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়া থেকে বন্ধুর বাড়ি জীবননগর বেড়াতে আসার পথে ট্রেনে কাটাপড়া হাঁস দেখতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে কম্পিউটার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিঙের ছাত্র শাওন (২৪)। গতকাল রোববার দুপুরে জয়রামপুর স্টেশনের অদূরে ট্রেনে কাটা পড়া হাস ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে মাথা উচিয়ে দেখতে গিলে রেললাইনের পিলারে আঘাত লেগে আছড়ে পড়েন তিনি। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে রাজশাহী মেডিকেলে নেয়ার পথে সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় তার।

জানা গেছে, কুষ্টিয়া কাটাখানা মোড়ের ফার্মেসিব্যবসায়ী মকলেছুর রহমান মুক্তির ছেলে শাওন কুষ্টিয়া পলিটেকনিকেলের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিঙের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার সহপাঠী নীরবের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে। কয়েক বন্ধু মিলে গতকাল জীবননগরস্থ নীরবের বাড়িতে বেড়াতে আসছিলো। পোড়াদহ থেকে ট্রেনে ওঠে। দর্শনা হল্টস্টেশনে নামার কথা ছিলো। জয়রামপুর স্টেশনের আগেই আখ সেন্টারের নিকট ট্রেনে কাটা পড়ে একই এলাকার নূরুল ইসলামের ছেলে বেনজিন আহম্মেদের দুটি হাঁস। ট্রেনে হাঁস কাটা পড়ার দৃশ্য দেখতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে শাওনের সাথে থাকা তার সহপাঠি নীরব, মামুন, জুয়েল, সাগর ও নাঈম অভিন্ন ভাষায় বলেছেন, শাওনসহ ৬ বন্ধু ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। জয়রামপুর স্টেশনের আগেই হাঁস কাটা পড়লে ট্রেন ভ্রমণকারীদের মধ্যে কৌতূহল দানা বাধে। শাওন দরজার রড ধরে ঝুলে ট্রেনে কাটাপড়া হাঁস দেখতে যায়। এ সময় সিগন্যাল পিলারের সাথে মাথায় আঘাত লাগে। আছড়ে পড়ে। সকলে মিলে ট্রেন থামানোর জন্য চেন টেনে ধরি। আনুমানিক ৭শ মিটার দূরে গিয়ে ট্রেনটি থামে। ট্রেন থেকে নেমে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি হাঁসমালিক বেনজিন আহম্মেদ রেললাইনের পাশের জঙ্গল থেকে রক্তাক্ত শাওনকে উদ্ধার করছেন। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। অ্যাম্বুলেন্সযোগে শাওনকে রাজশাহীর পথে নেয়া হয়। সন্ধ্যায় মারা যায় সে।

শাওন দু ভাইয়ের মধ্যে ছোট। তার পিতার কুষ্টিয়াতেই রয়েছে ফার্মেসি। বন্ধুর বাড়িতে বেড়ানোর জন্য রওনা হয়ে দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গেছেন তার পিতা-মাতাসহ নিকটজনেরা।