কবিরাজের অপচিকিৎসা : পঙ্গুতের পথে কিশোর

সখের বশে মোটরবাইকের শওয়ার হয়ে বিপত্তি : গুঁড়িয়ে গেছে পা

 

স্টাফ রিপোর্টার: শখের বসে অন্যের মোটরবাইকের শওয়ার হয়ে দুর্ঘটনার শিকার কিশোর হাসান ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু হতে বসেছে। কবিরাজের অপচিকিৎসার কারণে কিশোরের একটি পা শরীর থেকে কেটে ফেলতে হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার। তিনি বলেছেন, ৪শ টাকায় সুস্থ হওয়ার আশায় কবিরাজের কাছে গিয়ে এখন ৪০ হাজার টাকায়ও হাসান সুস্থ হতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী গ্রাম মেদেনীপুরের ফরজুল্লাহ শেখের ছেলে হাসান (১৪) গত বুধবার গ্রামেরই দিনুর ছেলে আনারের মোটরসাইকেলের পেছনে ওঠে। সখের বশে ঘুরতে বেরিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। হাসানের পা গুঁড়িয়ে যায়। আনারও সামান্য আহত হয়। হাসানকে উদ্ধার করে প্রথমে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। গুঁড়িয়ে যাওয়া পায়ের অবস্থা অশঙ্কাজনক দেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রোগী হাসানকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল অথবা রাজশাহী মেডিকেলে নেয়ার পরামর্শ দেন। হাসানের পিতা দরিদ্র এবং সরলসোজা। তিনি গ্রামের কয়েকজনের পরামর্শে ছেলে হাসানকে নেন দর্শনার এক কবিরাজের কাছে। কবিরাজ হাসপতালের ব্যান্ডেজ খুলে গাছড়া দিয়ে বাঁশের চটা টাইট করে বেঁধে রোগীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে বলেন। গাছড়ার চিকিৎসা বাবদ কবিরাজ নেন ৪শ টাকা। দু দিনের মধ্যে অসহনীয় যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করে কিশোর হাসান। গতকাল শনিবার তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। গাছড়া দিয়ে বাঁশের চটার বাঁধন খুলে চিকিৎসকেরা দেখেন অবস্থা বেগতিক। ইতোমধ্যেই পচন ধরেছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়।

হাসানের গুঁড়িয়ে যাওয়া পায়ের দশা দেখে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাসুদ রানা বলেন, কবিরাজের নিকট নিয়ে কিশোরের পায়ের অবস্থা ভয়াবহ করে তোলা হয়েছে। অবস্থা এখন এতোটাই বেগতিক যে পাটি শরীর থেকে বিছিন্ন করতে হতে পারে। তিনি মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, কবিরাজের একের পর এক ভুল চিকিৎসায় অনেকের জীবনেই নেমে আসছে পঙ্গুত্বের অভিশাপ। হাসানকে অল্প টাকায় কবিরাজের চিকিৎসায় সুস্থ করার যে স্বপ্নদেখা হয়েছিলো তা এখন শুধু দুঃস্বপ্নই নয়, ভয়াবহ বিপদে পরিণত হয়েছে। ৪শ টাকার চিকিৎসা নিয়ে এখন ৪০ হাজার টাকা খরচ করেও ওকে সুস্থ করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না।

 

Leave a comment