দশ দিন ধরে স্কুলে ক্লাস না হওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাকার্যক্রম ব্যহত

 

হরিণাকুণ্ডু প্রিয়নাথ হাইস্কুলে গোপনে কমিটি গঠনের জের

 

হরিণাকুণ্ডু প্রতিনিধি: হরিণাকুণ্ডু প্রিয়নাথ হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক গোপনে কমিটি গঠন করায় স্থানীয় নাগরিক সমাজ শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ করে দিয়েছে। দশ দিন ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবন। সম্প্রতি স্কুলটিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কলেজিয়েট করার প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু স্কুল ম্যানেজিং কমিটি অবকাঠামোগত সমস্যা এবং জনবল সঙ্কটের কথা চিন্তা করে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করার সিন্ধান্ত গ্রহণ করে। চলতি শিক্ষাবর্ষে যখন ছাত্রছাত্রী ভর্তি শেষ। তখন হঠাত করে প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস চলমান নিয়মিত কমিটি বাতিল করে স্তর পরিবর্তেনের সুযোগ নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি নির্বার্হী কমিটি গঠনের জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেন। ৩ আগস্ট আবেদনের প্রেক্ষিতে পরদিন ৪ আগস্ট কমিটি অনুমোদন করা হয়। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে কমিটি অনুমোদন হওয়ায় এলাকার সচেতন নাগরিক সমাজ বিস্ময় প্রকাশ করেছে। নতুন কমিটিতে জাহাঙ্গীর হোসেনকে সভাপতি এবং তার ভাই জামাল উদ্দীনকে সদস্য, অপরদিকে প্রধান শিক্ষক নিজে সদস্য সচিব এবং তার ছেলে প্রকাশ চন্দ্র বিশ্বাসকে সদস্য, অপর সদস্য করা হয় চলমান কমিটির সভাপতি সঞ্জয় কুমার রায় চৌধুরীকে। অথচ নিয়মিত কমিটির মেয়াদ আগামী ৪ অক্টোবর পর্যন্ত বহাল আছে। এ অবস্থায় নতুন কমিটি গঠনের বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়লে ফুসে ওঠে উপজেলা সদরের সচেতন নাগরিকবৃন্দ। রমজানের বন্ধের পর ৯ আগস্ট স্কুল খুললে পৌর মেয়র শাহিনুর রহমান রিন্টুর নেতৃত্বে স্কুলের অভিভাবক ও বর্তমান কমিটির সদস্যসহ কয়েকশ মানুষ স্কুলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। স্কুলে প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে তারা হল বাজারস্থ প্রধান শিক্ষকের বাড়ি ঘেরাও করে। কিন্তু বাড়িতে প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে নতুন কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার আল্টিমেটাম প্রদান করে। সেই থেকে আজ অবধি কোনো ক্লাস না হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। শিক্ষক কর্মচারীগণ এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে স্কুলে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে প্রধান শিক্ষকের সাথে তার সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে প্রধান শিক্ষকের ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, তিনি যশোরে অবস্থান করছেন। বোর্ড চেয়ারম্যান যশোরের বাইরে থাকায় কমিটির বিষয়টি নিরসন করতে পারছেন না। তবে চেয়ারম্যান ফিরলে নতুন কমিটি বাতিল করে তিনি স্কুলে ফিরবেন বলে তারা অভিমত প্রকাশ করে। চলমান কমিটির সভাপতি সঞ্জয় কুমার রায় চৌধুরী স্থানীয় নাগরিকদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে কমিটি গঠনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

এদিকে স্কুলটির অভিববাকগণ চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। কবে নাগাদ এ সমস্যার সমাধান হবে, আর কবেই বা স্কুলে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। উপজেলার সুনামধন্য একটি স্কুলে উদ্ভুত সমস্যা সমাধানে অভিভাবকসহ সচেতন এলাকাবাসী সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছে।