হাটফেরা গরুব্যবসায়ীদের কুপিয়ে পিটিয়ে ৫ লক্ষাধিক টাকা ডাকাতি : বোমা বিস্ফোরণ

 

দামুড়হুদার রঘুনাথপুর-কাদিপুর সড়কে সন্ধ্যারাতে দীর্ঘ সময় ধরে ডাকাতদলের ভয়াবহ তাণ্ডব

 

স্টাফ রিপোর্টার/দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার কাদিপুর-রঘুনাথপুর সড়কে বোমা ফাটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ৫ লক্ষাধিক টাকা ডাকাতি করেছে একদল ডাকাত। গতরাত সোয়া ৮টার দিকে সড়কের একটি ইটভাটার অদূরে ১৫/১৮ জনের একদল ডাকাত দীর্ঘ সময় ধরে তাণ্ডব চালায়। ডাকাতদলের ধারালো অস্ত্রের কোপে আহত হয়েছে ৪/৫ জন। এদের মধ্যে রঘুনাথপুরের আব্দুল আলিমকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডাকাতির কবলে পড়া সকলেই গরু ব্যবসায়ী। ডুগডুগি পশুহাট থেকে ফেরার পথে ডাকাতির শিকার হন তারা।

জানা গেছে, গতকাল সোমবার ছিলো দামুড়হুদার ডুগডুগির সাপ্তাহিক পশুহাট। কেউ গরু বিক্রি করে, কেউ গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। কাদিপুর-রঘুনাথপুর সড়কের একটি ইটভাটার অদূরে ডাকাতদল অবস্থান নেয়। একটি ট্রলিযোগে কয়েকজন গরুব্যবসায়ী পৌঁছুলে তাদের ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছিনিয়ে নেয় কয়েক লাখ টাকা। এক মোষব্যবসায়ী মোষ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ডাকাতদলের কবলে পড়েন। তাকে সড়কের ধারে বেঁধে রাখে ডাকাতদল। পকেটে আড়াইশ টাকা থাকার কারণে চড়থাপ্পড়ও মারে তাকে। ডাকাতির কবলে পড়া ট্রলিযাত্রীদের কারো বাড়ি রঘুনাথপুরে, কারো বাড়ি পার্শ্ববর্তী গ্রামে। ট্রলিযাত্রী গরুব্যবসায়ীদের তেমন কাউকে ধারালো অস্ত্রের কোপে ও লাঠিপেটা করে জখম না করলেও ট্রলির পেছনে থাকা করিমনযাত্রীদের ওপর মারমুখি হয়ে ওঠে ডাকাত সদস্যরা। তারা রঘুনাথপুরের মৃত মুক্তার আলীর ছেলে আব্দুল আলিমকে (৪০) কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। তার আন্ডারওয়ারে থাকা নগদ ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়। তবে অন্য স্থানে থাকা ১০ হাজার টাকা রক্ষা পেয়েছে। আব্দুল আলিমের সাথে একই করিমনে থাকা একই গ্রামের মসলেম আলীর ছেলে ফারুকের নিকট থেকে ৪৫ হাজার টাকা, রমজান আলীর ছেলে কিবরিয়ার নিকট থেকে ৩০ হাজার টাকা, মাজার মণ্ডলের ছেলে সোহেলের নিকিট থেকে ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ডাকাতদল। ডাকাতদল ডাকাতির সময় একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। ডাকাতি শেষে পরপর দুটি বোমা নিক্ষেপ করে। একটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলেও অপরটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকে। পরে সেটি পুলিশ উদ্ধার করেছে। একই সাথে আব্দুল আলিমকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিতে সহায়তা করে পুলিশ।

ডাকাতির শিকার গরুব্যবসায়ীদের মধ্যে আব্দুল আলিম, ফারুক, কিবরিয়া ও সোহেল বলেছেন, আমরা গরু কেনার জন্য টাকা নিয়ে ডুগডুগি হাটে গিয়েছিলাম। পরতা মতো গরু না পাওয়ার কারণে টাকা নিয়ে ফিরছিলাম। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছে, ডাকাতির সময় কৌশলে একজনের মাধ্যমে পুলিশকে জানানো হলেও ঘটনার এক ঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ডাকাতদলের হাতে ছিলো ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসহ বোমা। পুলিশ বলেছে, ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদলের পিছু নেয়া হয়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডাকাতদলের টিকি ছুতে পারেনি পুলিশ। ঈদকে সামনে নিয়ে দামুড়হুদাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ডাকাতি ছিনতাই আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেলেও পুলিশ কার্যত তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা-ই নিতে পারছে না। এরই মাঝে গরু ব্যবসায়ীদের ওপর সন্ধ্যারাতে ডাকাতদল তাণ্ডব চালালো।