প্রচারিত গল্পের কুপ্রভাব : কবিরাজ ডেকে নাটক!
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নের মাদারহুদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের মাঝে জিন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ৩ দিনের ব্যবধানে ৬ জন ছাত্রছাত্রীর গায়ে জিন ভর করেছে বলে দাবি করা হলেও চিকিৎসকদের দাবি, গণহিস্ট্রিয়া। গল্প শুনে দুর্বলচিত্তের শিশু-কিশোরদের এরকম হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এরপরও শিক্ষকেরা আতঙ্কিত রয়েছেন। কবিরাজ ডেকে তাড়ানো হয়েছে জিন। গ্রামের মসজিদে ও স্কুলে ছিন্নি করলে আর আসবে না জিন। ছাত্রছাত্রীদের দেয়া হয়েছে কালি সাধনের তাবিজ।
স্থানীয়রা বলেছে, গতকাল বুধবার সকাল ১১টার দিকে আলমডাঙ্গার মাদারহুদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অফিস রুমে আলমডাঙ্গার ডাউকির মাজু গ্রামের মৃত খন্দকার ওয়াদুদের ছেলে কবিরাজ আবুল কাশেম ও তার সহযোগী জামজামির মৃত আমজাদের ছেলে হেলাল উদ্দিন পাটি পেড়ে ৬ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে মন্ত্র জপ করছেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যে স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী সাথির গায়ে জিন ভর করেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। অথচ কিছু প্রশ্নে উল্টো পাল্টা জবাব দিয়ে সে বলে, জিনের এক ছেলে এই স্কুলে পড়তো। তাকে স্যারে মারার কারণে এমনটি হচ্ছে। গ্রামের মসজিদে ও স্কুলে ছিন্নি দিলে এই স্কুলে জিন আসবে না বলে জানায়।
এ ব্যপ্যারে স্কুলের সভাপতি ইল্লা জানান, গত ৩ দিনের ব্যবধানে গত সোমবার ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র তামিম, গত বুধবার ২য় শ্রেণির ছাত্রী সাথি, রোববার ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র সোহান, ৩য় শ্রেণির ছাত্রী বন্যা ও বৃহস্পতিবার মহাবুব নামের ছাত্রের গায়ে জিন লাগে। তাদের গায়ে জিন ভর করার সাথে সাথে তারা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। স্কুলের মধ্যে ছুটাছুটি ও দৌঁড়ে ছাদে ওঠাসহ নানান ঘটনার জন্ম দেয়। প্রথমে তাদের গ্রামের কবিরাজ আলী, নুরু কবিরাজকে ডাকা হয়ে তাদের দিয়ে কোনো কাজ না হলে মাজু গ্রাম থেকে আবুল কালাম কবিরাজকে ডাকা হয়। তিনি রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।
কবিরাজকে জিন সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্য কৌশলে এড়িয়ে যান। স্থানীয় সচেতন যুবসমাজ বলেছে, জিন নিয়ে কল্পিত নানা কাহিনি প্রচারের কারণেই এমনটি হয়েছে। একবার আতাগাছ নিয়ে গল্প ফাঁদা হচ্ছে, একবার জিনের ছেলে ছাত্রকে মারধরের গল্প বলে জিন আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। আতঙ্কের কারণেই যে দুর্বল চিত্তের শিক্ষাথীরা জিনে ধরার আচরণ করছে তা শিক্ষকরাও বুঝতে পারছেন না। হাইরে সমাজ! হায়রে শিক্ষা।