শৈলকুপায় সহস্রাধিক কৃষক শসাচাষে স্বাবলম্বী

 

 

ঝিনাইদহ অফিস:অনেকেরই খাবারের সাথে শসার সালাদ চাই-ই চাই। তরকারি হিসেবেও শসার জুড়ি মেলা ভার। গ্রীষ্মকালীন সবজিগুলোর মধ্যে শসা একটি অন্যতম অর্থকরী ফসল। তবে এখন প্রায় বারো মাসই শসার চাষ হয়ে থাকে। রমজানে কৃষকেরা ভালো দাম পেয়ে থাকেন। অল্প খরচে ভালো লাভ হওয়ায় ঝিনাইদহের শৈলকুপার কৃষকরা ঝুঁকছেন শসা চাষে। এখানকার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রামে শসার চাষ হচ্ছে।

কৃষকরা জানান, এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করতে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আর বিক্রি করা যায় প্রায় লাখ টাকার শসা। বীজ রোপণের এক মাসের মাথায় ফল ধরতে শুরু করে। বিক্রি করা যায় চার মাস ধরে। সাথী ফসলের সাথে এ চাষ করা যায়। সামনে রমজান; তাই সহস্রাধিক কৃষক পরিবার এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে শসার ক্ষেতে। ট্রাকের পর ট্রাক ভর্তি শসা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। দেশজুড়ে সুনাম রয়েছে শৈলকুপার শসার। উপজেলার ত্রিবেনী, মির্জাপুর, দিগনগর, কাঁচেরকোল ও দুধষর ইউনিয়নের কৃষকেরা বছরের পর বছর নিয়মিত শসা চাষ করে আসছে। পাঁচটি ইউনিয়নে প্রায় ২শ হেক্টর জমিতে শসার চাষ হয়েছে। তবে এসব ইউনিয়নের মধ্যে পদমদি, শেখপাড়া, রামচন্দ্রপুর, সাধুখালি, চরপাড়া, আনন্দ নগর, ভদ্রডাঙ্গা গ্রামে এবার শসার চাষ হয়েছে বেশি। শসার বাজারদর ওঠা-নামা করলেও এখন কেজি প্রতি ১৮-২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুধু সংসারের খরচই নয়, ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ, আত্মীয়-স্বজন দেখাশোনাসহ সব খরচই এ লাভজনক শসা চাষ করে। তারা আর্থিক দিক দিয়েও সাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। এ ব্যাপারে শেখপাড়া গ্রামের কৃষক সবদুল মোল্যা জানান, তবে সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় এবার সেচ খরচ একটু বেশি তবে বাজারে শসার দামও ভালো। তিনি সার ও ওষুধের দাম কমানোর দাবি জানান। শেখপাড়া বাজারে শসা কেনার সময় ব্যবসায়ী রেজাউল করিম জানান, গত ১০ বছর ধরে তিনি এ বাজার থেকে শসা কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান।

দেশীয় ও ভারতীয় ভ্যারাইটস নামে দু জাতের শসার চাষ হয় এখানে। চৈত্র মাসের মাঝামাঝি বীজ বপণের পর বৈশাখের মাঝামাঝি থেকে শসা ধরা শুরু করে। শসা বিক্রির বড় বাজার শেখপাড়া ও চড়ই বিল। সপ্তায় তিন দিন ট্রাক ট্রাক শসা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়।মূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা শসা চাষে ঝুঁকছেন বলে জানায় কৃষি অফিস। শৈলকুপা উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, আধুনিক চাষ পদ্ধতি, ভালো বীজ বিতরণসহ মাঠ পর্যায়ে শসা চাষিদের পরামর্শ দেয়া হয়। তিনি জানান, শসা উৎপাদনের তিনটি মরসুম আছে। প্রথম মরসুম মাঘ মাসের মাঝামাঝি থেকে জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝি। দ্বিতীয় মরসুম ভাদ্রের মাঝামাঝি থেকে কার্তিকের মাঝামাঝি। কার্তিকের শেষ সময় থেকে পৌষের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে তৃতীয় মরসুম। শসা চাষের জন্য দো-আশ ও এটেল-দোআশ মাটি উপযোগী। জলাবদ্ধ স্থান চলবে না।