স্ত্রীকে হত্যা করে ঘাতক স্বামীর আত্মগোপন : সেপটিক ট্যাংক থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার

 

আলমডাঙ্গা জোড়গাছায় তীব্র দুর্গন্ধ দিলো লাশের সন্ধান : এনজিওর ঋণ পরিশোধ নিয়ে বাধে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া

 

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে মুন্সিগঞ্জ/ঘোলদাড়ি প্রতিনিধি: নিখোঁজ হওয়ার দু দিনের মাথায় আলমডাঙ্গা জোড়গাছার স্ত্রী মাহেরণ নেছা মরিয়মের বস্তাবন্দি অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।গতরাত ৯টার দিকে ল্যাট্রিনের সেপটিক ট্যাংক থেকে মরিয়মের লাশ উদ্ধার করা হয়।স্বামী আমিরুল ইসলাম ওরফে আমির গা ঢাকা দিয়েছেন।

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ধারণা, স্বামী আমিরুল ইসলাম আমির তার স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ নিজেদের বাড়ির পাটকাঠি দিয়ে ঘেরা পায়খানার ট্যাংকির মধ্যে ফেলে আত্মগোপন করেছেন।তাকে ধরতে ইতোমধ্যেই পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের অনেকেই মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছে, আমিরুল ইসলাম আমির একাধিক এনজিও থেকে তার স্ত্রীকে দিয়ে ঋণ গ্রহণ করিয়েছেন। টাকা পরিশোধের কৌশল হিসেবে স্ত্রীকে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, আমির মাদকাসক্ত। বিভিন্ন এলাকায় নেশা করে বেড়ান। তার বড় ছেলে ঢাকায় থাকে।সে সম্প্রতি ৪ হাজার টাকা পাঠায়।সেই টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে চাইলে স্ত্রী মেহেরন নেছা মরিয়মের (৩৮) সাথে আমিরের ঝগড়া বাধে।এরপরই শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্ত্রী মরিয়মের লাশ বস্তায় ভরে পায়খানার ট্যাংকের মধ্যে ফেলে দিয়ে নিজে আত্মগোপন করেছেন।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের রোয়াকুলির মওলা বকশের মেয়ে মেহেরন নেছা মরিয়মের সাথে জোড়গাছার আবুল হোসেনের ছেলে আমিরুর ইসলাম আমিরের বিয়ে হয় আনুমানিক ১৯ বছর আগে।এদের সংসারে আসে দু ছেলে। বড় ছেলে রনির বয়স এখন প্রায় ১৮ বছর। সে ঢাকায় থাকে। কখনো গার্মেন্টসে, কখনো মোজাইক মিস্ত্রির কাজ করে। ছোট ছেলে জনি ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র। আমিরুল ইসলাম আমির মাদকাসক্ত। উড়নচণ্ডি প্রকৃতির। স্ত্রী মরিয়মই তার সংসার আগলে রাখতেন। গত সোমবার স্বামী-স্ত্রী দুজনই নিখোঁজ হন। পরিবারের সদস্যরা আমির ও মরিয়মকে না পেলেও তেমন উদ্বিগ্ন হয়নি। খবর পেয়ে মরিয়মের ভাই নাসির খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সম্ভাব্য স্থানে খুঁজে না পেয়ে আলমডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। এরই এক পর্যায়ে মরিয়মের প্রতিবেশীরা দুর্গন্ধ পায়।কৌতূহলবশে পায়খানার সেপটিক ট্যাংকে টর্চলাইট মেরেবস্তা দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়।লাঠি দিয়ে খোঁচা দিতেই দুর্গন্ধের মাত্রা বহুগুণে বেড়ে যায়। খবর দেয়া হয় পুলিশে। স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশ ও আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ গতরাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পায়খানার ট্যাংক থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে।

আলমাডাঙ্গা থানা পুলিশ বলেছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছেমরিয়মকে তার স্বামী আমির শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে ল্যাট্রিনের সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে ফেলে আত্মগোপন করেছেন।আজ বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে মরিয়মের লাশ ময়নাতদন্ত করা হবে। ইতোমধ্যেই আমিরকে ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।হত্যা ও লাশ গুমের সাথে আর কেউ জড়িত কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।