দেশের ৪৪ ভাগ শিশু যাদের বয়স ৫ বছরের নিচে, তারা অপুষ্টিতে এবং তাদের মধ্যে যখন ৪৪ ভাগ ভুগছে জিঙ্ক স্বল্পপতায় তখন দেশে জিঙ্কসমৃদ্ধ ধান চাষে সফলতার খবর ইতিবাচক বটে। আমরা পারি, নানাভাবেই আমাদের সক্ষমতা আমরা দেখিয়েছি। স্বক্ষমতা আমাদের স্বনির্ভরতা অর্জনের পথ অবশ্যই সুগম করবে।
কৃষিক্ষেত্রে আরও একটি সাফল্য দেখালো বাংলাদেশ। সম্প্রতি নীলফামারীতেপরীক্ষামূলকভাবে নতুন উদ্ভাবিত জিঙ্কসমৃদ্ধ ধান উৎপাদিত হয়েছে। কৃষিবিজ্ঞানীরা নতুন উদ্ভাবিত এ ধানের নাম দিয়েছেন ব্রি৬২ ও ব্রি৬৪ যা ব্রি২৮ ধানের বিকল্প। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন,এ ধরনের ধানের আবাদ বাংলাদেশেএবারই প্রথম। এ চালের ভাত খেলে মেধা বিকাশের পাশাপাশি শারীরিক বৃদ্ধিওঘটবে।নীলফামারী জেলার অর্ধশত চাষি এবার পরীক্ষামূলকভাবে জিঙ্কসমৃদ্ধধান আবাদ করেছেন। আবাদ শেষে ভালো ফলনে চাষিরাও সন্তুষ্ট। জিঙ্কসমৃদ্ধ এ ধানেসার্বিক সহায়তা দিয়েছে আরডিআরএস বাংলাদেশ ও হারভেস্ট প্লাস বাংলাদেশ। এধানের উৎপাদন শেষে লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের নিত্যানন্দী গ্রামে জিঙ্কধানের মাঠদিবস পালন করা হয়। কৃষি গবেষকদের দাবি,জিঙ্কসমৃদ্ধ ধান মানুষেরবিশেষ করে শিশুদের রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি মেধা ও শারীরিক বিকাশে বিশেষভূমিকা রাখবে। কৃষি গবেষকরা বলছেন,নীলফামারীর পাশাপাশি দেশের মাটি ওআবহাওয়া সহিষ্ণু উচ্চফলনশীল অন্য ধানেও জিঙ্ক সংযুক্তির মাধ্যমে সব ধানকেইজিঙ্কসমৃদ্ধ করা যাবে। হারভেস্ট প্লাস বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ প্রোগ্রামেরকান্ট্রি ম্যানেজার জানান, এবার বোরো আবাদেজিঙ্কসমৃদ্ধ ধান আবাদ করা হয়েছে। আসছে আমন মরসুমেও এ ধান কৃষকদের মাধ্যমেআবাদ করা হবে। এর মাধ্যমে স্বল্প সময়ে জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের বীজ কৃষকদের মধ্যেসম্প্রসারিত হবে।কৃষকরা যথাযথভাবে উৎপাদন করলেও তা কতোটা ভেজালমুক্ত অবস্থায় ভোক্তাদের হাতে পৌঁছুবে তা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে অনেক যুক্তি আছে। ভেজালমুক্ত তথা দুর্নীতি দূর করার মতো দায়িত্বশীল প্রশাসন পেলে স্বস্তি মিলতো। যেমন স্বস্তি কৃষি বিজ্ঞানিদের আবিষ্কারে।
পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, যেহেতু ধান আমাদের প্রধান খাদ্য তাই জিঙ্কসমৃদ্ধধান চাষ এবং এর ভাত খেয়ে সহজে জিঙ্কের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।কৃষি বিজ্ঞানীরা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলছেন,পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্যঅঞ্চলেও জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের চাষের মাধ্যমে অপুষ্টির শিকার শিশু ও গর্ভবতীমায়েদের স্বাস্থ্য সেবার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে।