সরকার গঠন করা দল এবং বিরোদী দলকে অবশ্যই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হতে হবে
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার মানুষের কল্যাণে সাংবাদিকদের শানিত কলমকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেছেন, চুয়াডাঙ্গার উন্নয়নে চুয়াডাঙ্গাবাসী সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যতোটা দ্রুত সম্ভব ততোটা দ্রুতই উন্নয়নের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। উন্নয়নে আন্তরিকতার কমতি নেই।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার এমপি দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, দেশে সরকার থাকবে, থাকবে শক্ত বিরোধী দল। শক্ত বিরোধী দল না থাকলে গণতন্ত্রের সুষ্ঠু চর্চা ব্যাহত হয়। সরকার গঠন করা দল এবং বিরোধী দলকে অবশ্যই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করতে হবে, স্বাধীনতাকে স্বীকার করতে হবে। বহু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত জাতীয় পতাকাকে যে দল সম্মান করে না, সেই দলকে বাঙালি জাতি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় তথা সরকারে বা বিরোধী দলে দেখতে চায় না।
প্রেসক্লাব সভাপতি প্রবীণ শিক্ষক মাহতাব উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনাসভার মধ্যমণি ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, দেশটি নিয়ে খেলা চলছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি এখনও মাথাচাড়া দিয়ে দেশবিরোধী চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করতে যে যেখানেই আছি আমরা, আমাদের সকলকেই সজাগ থেকে দেশের পক্ষে, দেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে। দেশকে পরনির্ভরতা থেকে স্বনির্ভরতার দিকে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন সেটাই। তিনি ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান। পরনির্ভরতা হ্রাস করে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রেসক্লাব প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রিচার্ড রহমানের উপস্থাপিত সংবর্ধনাসভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সরদার আল আমিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা ইউনিটের সভাপতি অ্যাড. এসএম শরীফ উদ্দীন হাসু ও সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহার আলী। মানপত্র পাঠ করেন ক্লাবের সহসভাপতি জেড আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আজাদ মালিতা, কার্যকরি কমিটির সদস্য সাবেক সদস্যসচিব নাসির উদ্দীন আহম্মেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি, জীবননগর প্রেসক্লাব সভাপতি আনোয়ারুল কবীর, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নূর নবী, আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি শেখ শফিউজ্জামান, সাংবাদিক ইউনিট সরোজগঞ্জ অঞ্চলের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন। চুয়াডাঙ্গা সাংবাদিক সমিতির পক্ষে ফুল দিয়ে সংবর্ধিত অতিথিকে অভিনন্দিত করেন প্রেসক্লাবের সাবেক দু সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি ও মরিয়ম শেলী, সমিতির সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক ইসলাম রকিব প্রমুখ। প্রেসক্লাবের পক্ষে হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের হাতে তার ৫টি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সচিত্র সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন প্রদান করা হয়। বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনগুলো প্রেসক্লাবের সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ১০ম জাতীয় সংসদের হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন স্থানীয় উন্নয়ন প্রসঙ্গে মাথাভাঙ্গা নদী পুনর্খননের বিষয়টি কোথায় কীভাবে আটকে গেছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। চুয়াডাঙ্গাকে সরকারিভাবে কৃষিজোন ঘোষণা প্রসঙ্গে বলেন, ইতোমধ্যে ৬শ কোটি টাকা ব্যয়ে মুজিবনগর কৃষিজোন প্রকল্প সরকার হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পভুক্ত চুয়াডাঙ্গা। যেহেতু চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা বর্তমানে দেশের চাহিদার ২৫ শতাংশ বীজ সরবরাহ করছেন, সেহেতু আমাদের প্রত্যাশা ওই প্রকল্প চালু হলে দেশে চাহিদার অর্ধেক বীজই চুয়াডাঙ্গার কৃষকেরা সরবরাহ করতে পারবেন। এছাড়া ইতোমধ্যেই বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
হুইপ ছেলুন জোয়ার্দ্দার এমপি চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, বিগত দিনেও সহযোগিতায় কমতি ছিলো না। এখনও প্রেসক্লাবের উন্নয়নে আন্তরিকতায় ঘাটতি থাকবে না। তবে একদিনে নয়, ধীরে ধীরে ক্রমান্বয়ে উন্নয়ন করতে হবে। প্রেসক্লাবের তৃতীয়তলার নির্মাণ কাজ সম্পন্নই শুধু করা হবে না, আরো যা যা করার সবই করতে সার্বিক সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে।