ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় স্মরণকালের ভয়াবহ কালবোশেখি ঝড়ে ৪০টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়েছে। ঝড়ের আঘাতে ৫ শতাধিক বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত, ফসল ও গাছ-পালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। ঝড়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঝড়ের কারণে বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ায় উপজেলাজুড়ে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অনেকে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। কয়েকটি গ্রামের রাস্তায় গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, গতবুধবার রাত ২টার দিকে শৈলকুপা উপজেলার ওপর কালবোশেখি ঝড় আঘাত হানে। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলে ঝড়ের তাণ্ডব। ঝড়ের আঘাতে শৈলকুপা পৌরসভার ত্রিবেনী, মির্জাপুর, কাঁচেরকোল, দিগনগর ও সারুটিয়া ইউনিয়নের অন্তত ৪০টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এসময় ৫ শতাধিক কাঁচা ও পাকা বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ২০ জন আহত হন। ঝড়ের সাথে শিলাবৃষ্টিতে উঠতি বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্থানে পাকা ধান ক্ষেত মাটির সাথে মিশে গেছে। কয়েকশ হেক্টর জমির কলাগাছ ভেঙে পড়েছে। পানের বরজ ও সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাজার হাজার গাছপালা উপড়ে পড়েছে। এদিকে ঝড়ের পর ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাতে হচ্ছে। অনেকেই বলেছেন,৫০ বছরের মধ্যে এলাকার মানুষ ঝড়ের এমন তাণ্ডব দেখেননি। সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পদমদী, শেখপাড়া, রতিডাঙ্গা, বোয়ালিয়া, আনন্দনগর, ভদ্রডাঙ্গা, শ্রীরামপুর, বসন্তপুর, নিশ্চিন্তপুর, তমালতলা ও শিতলীডাঙ্গা গ্রাম।
স্থানীয় দিগনগর ইউপি চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক জানান, শুধু তার ইউনিয়নেই দু শতাধিক বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এলাকার মানুষগুলো অসহায় হয়ে পড়েছে। ঝড়ে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ঝড়ে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনও নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। সকালে জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলাম ও শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহম্মদ আলী প্রিন্স ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। দুপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে নগদ টাকা ও ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে।