তীব্র তাপ প্রবাহে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরসহ সারাদেশের মানুষঅতিষ্ঠ

 

স্টাফ রিপোর্টার: তীব্র তাপ প্রবাহে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরসহ সারাদেশের মানুষঅতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দু দিনের পূর্বাভাবে দেশবাসীর জন্য কোনো সুখবর দিতে পারেনি আবহাওয়া অধিদফতর। চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো রাঙামাটি ৪১ দশমিক ১ আর চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়া রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো শ্রীমঙ্গলে ১৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, মরসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত না হওয়া পর্যন্ততাপমাত্রা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। আগামী দু-তিন দিনে বৃষ্টিপাতেরও কোনোসম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় সবাইকে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেনচিকিৎসকরা।আজরাজধানীসহ সারাদেশের তাপমাত্রা মঙ্গলবারের চেয়েও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গরমে সারাদেশে বেড়ে গেছে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার হার।আজ চুয়াডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় আকাশে হালকা মেঘ দেখা দিতে পারে। তবে আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকবে। সীতাকুণ্ড, রাঙ্গামাটি, রাজশাহী, খুলনা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দেশের অন্যত্র মাঝারি থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়াঅধিদফতরের পরিচালক শাহ আলম বলেন, এপ্রিল মাস বাংলাদেশের সবচেয়েগরম মাস। এ মাসে সূর্য দেশের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকে এবং দিনও থাকেবড়। এ বছর আরও যোগ হয়েছে বৃষ্টি না হওয়াজনিত সঙ্কট। যে কারণে তাপমাত্রাউত্তরোত্তর বাড়ছে। আগামী দু-তিন দিনে এ তাপমাত্রা কমার লক্ষণ নেই।কেননা আগামী দু-তিন দিনে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা প্রায় নেই। আর বৃষ্টিপাত নাহলে স্বাভাবিকভাবেই তাপমাত্রা আরও বাড়বে। সেক্ষেত্রে রাজধানী বা দেশেরসর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।আন্তর্জাতিকসংস্থাগুলোর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, কানাডার আজ (বুধবার) ঢাকা রাজধানীর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিসেলসিয়াস ছুঁয়ে ফেলতে পারে। তারপর এক-দু ডিগ্রি সেলসিয়াস করে তাপমাত্রাকমবে। তবে আগামী সোমবারের আগে রাজধানীতে বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই।বিবিসি ওয়েদারের পূর্বাভাস অনুযায়ী শুক্রবার পর্যন্ত ঢাকার তাপমাত্রা কমারকোনো লক্ষণ নেই। শনিবার বিকেলে ও সন্ধ্যায় ঢাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনারয়েছে। ওয়েদার ফোরকাস্ট ডটকমের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার রাজধানীরতাপমাত্রা চলতি সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ: প্রচণ্ড গরমে বয়স্ক মানুষ, দুগ্ধপোষ্যশিশু, কিশোর-কিশোরী, শ্বাসকষ্টের রোগী, দীর্ঘ সময় রোদে কাজ করে এমনপেশাজীবী যেমন কৃষক, রিকশাওয়ালা, নির্মাণ শ্রমিক ইত্যাদি এবং পথশিশু ওভবঘুরেসহ যারা রাস্তায় থাকে তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিথাকে। গরম মোকাবেলায় দিনে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে এবং সম্ভব হলে দিনেদুই-এক প্যাকেট স্যালাইন এবং দুই-এক গ্লাস গ্লুকোজ খেতে হবে। প্রচুরপানিযুক্ত ফল যেমন তরমুজ, পেঁপে, বাঙ্গি, আনারস ইত্যাদি খেতে হবে।কার্বন-ডাই-অক্সাইডযুক্ত পানীয় যেমন কোকো-কোলা, পেপসি ইত্যাদি এড়িয়ে চলতেহবে।

আবহাওয়া অধিদফতরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস: বাংলাদেশ আবহাওয়াঅধিদফতরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ২ এপ্রিলের বিশেষজ্ঞ কমিটিরনিয়মিত বৈঠকে বলা হয়, এপ্রিল মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ওমধ্যাঞ্চলে দুই-তিন দিন বজ সহ মাঝারি বা তীব্র কালবোশেখি বা বজ্র ঝড় এবংদেশের অন্যত্র তিন-চার দিন হালকা বা মাঝারি কালবোশেখি বা বজ্র ঝড় হতে পারে।দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং অন্যত্রদু-তিনটি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি) বা মাঝারি (৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি)তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।