লাখ টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কথিত রাঁধুনী খাদিজা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের রাঁধুনীর সহকারী খাদিজা খাতুন প্রতারণা করে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। অধিক লাভের আশায় টাকা দিয়ে হাসপাতালের কয়েকজন নার্স-কর্মচারীসহ এলাকার অনেকেই এখন হায় হায় করছেন। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চুয়াডাঙ্গায় অবস্থান করলেও খাদিজা নামধারী ওই মহিলার প্রকৃত নাম-ঠিকানা কেউ জানে না।

জানা গেছে, খাদিজা খাতুন (৪০) নামের এক মহিলা বছর দশেক আগে থেকে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের শান্তিপাড়ায় স্বামী-সন্তানসহ ঘরভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। তাকে স্বল্প বেতনভাতা’র চুক্তিতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের রাঁধুনী সুফিয়া সহকারী হিসেবে কাজে নেন। প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি হাসপাতালে এই কাজ করে হাসপাতালের নার্স-কর্মচারীসহ আশপাশ এলাকার মানুষের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। লাভ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় বছরখানেক ধরে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বেশ কিছু নার্স ও কর্মচারীর কাছ থেকে টাকা নেয়া শুরু করেন। কারো কারো মোটা অঙ্কের লাভও দিতেন মাসে মাসে। এ কারণে অনেকেই আগ্রহ করে টাকা দেয়া শুরু করেন। কেউ কেউ বিভিন্ন সমিতি থেকে তুলেও খাদিজাকে টাকা দিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বেশ কয়েকজন নার্স ও কর্মচারী ২০/৩০ হাজার টাকা করে লাভের আশায় টাকা দিলেও লজ্জায় মুখ খুলছেন না। কেউ কেউ স্বামীকে আড়াল করেও টাকা দিয়েছেন বলে নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানিয়েছেন দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে। এখন স্বামীরা জানলে সংসারে গণ্ডগোল হবে বলে কিছুই বলতে পারছেন না। এ ছাড়া শান্তিপাড়ার বেশ কিছু নারী-পুরুষের কাছ থেকেও বেশি বেশি লাভ দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন খাদিজা। হাসপাতাল, শান্তিপাড়াসহ আশপাশ এলাকা থেকে ৪ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়ে খাদিজা খাতুন গত পয়লা বোশেখের দিন সপরিবারে লাপাত্তা হয়ে যান। এতোদিন গোপনে গোপনে টাকা দিয়ে লাভ ভোগ করলেও খাদিজা লাপাত্তা হওয়ার পর থেকে টাকা খোয়ানো অনেকের নামই এখন মুখে মুখে। গত শুক্রবার সকালে এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আয়া আরজিনাকে আটক করে শান্তিপাড়ার লোকজন। ওই পাড়ার এক মহিলার কাছ থেকে যখন খাদিজা টাকা হাতিয়ে নেয় তখন আরজিনা উপস্থিত ছিলেন। ফলে সেই টাকার দায়িত্ব এখন আরজিনার ঘাড়েই পড়ে বলে দাবি করে শান্তিপাড়ার লোকজন। পরে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে স্ট্যাম্পে আরজিনার সই নেয়া হয় ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করবেন মর্মে। বিষয়টি নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল, শান্তিপাড়াসহ আশপাশ এলাকায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। টাকার শোকে অনেকেই হন্যে হয়ে খুঁজছে অভিযুক্ত খাদিজাকে।