পাইকগাছায় ঘুমন্ত স্ত্রী ও ছেলেকে নির্মমভাবে জবাই করে খুন

বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ দীপক দাশ : হাতপাতাল থেকে গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার: খুলনার পাইকগাছায় ঘুমন্ত স্ত্রী ও ছেলেকে নির্মমভাবে জবাই করে নিজে বিষপানে আত্মহত্যা প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে দীপক দাশ (৪২) নামের এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত ১টার দিকে। পুলিশ চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতাল থেকে দীপককে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালমর্গে পাঠায়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, খুলনা পাইকগাছা উপজেলার দক্ষিণ সলুয়া গ্রামের মৃত সন্তোষ দাশের ছেলে দীপক দাশ গত সোমবার রাত ১টার দিকে নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত স্ত্রী অনিমা দাশ (৩২) ও তার একমাত্র ছেলে সজীব দাশকে (৮) ধারালো দা দিয়ে নির্মমভাবে জবাই করে খুন করে নিজেও কীটনাশক পান করে। এ সময় বাইরে শব্দ শুনে বাড়ির দ্বিতীয় তলার ঘুমন্ত দীপকের কন্যা প্রিয়াঙ্কা (১৪) নিচে নেমে এলে সে দৌড়ে বাড়ির সামনের একটি পুকুরে লাফ দেয়। এ সময় প্রিয়াঙ্কার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে দীপককে উদ্ধার করে। এ সময় দীপক জানায়, সে তার স্ত্রী ও ছেলেকে খুন করেছে। এ সময় তারা ঘরে গিয়ে খাটের ওপর লাশ দেখতে পায়। দীপককে প্রথমে স্থানীয় কপিলমুনি ও পরে পাইকগাছা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেয়া হয়। খবর পেয়ে পাইকগাছা থানা পুলিশ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিকভাবে সে পুলিশের কাছে স্ত্রী ও সন্তানকে জবাই করার কথা স্বীকার করেছে। তবে ঠিক কি কারণে জবাই করেছে তা জানা যায়নি।

দীপকের একমাত্র কন্যা স্থানীয় হরিঢালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা দাশ জানায়, সে তার ঠাম্মার (দাদি) জোসনা রাণী দাশের সাথে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ঘুমায়। ঘটনার সময় তার বাবা তাদেরকেও জবাই করতে ওপরে ওঠে তবে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ ও বিদ্যুত বন্ধ থাকায় ওপরে চালের (ছাউনি) টিন খোলার চেষ্টা করলে তারা জেগে ওঠে। তবে কি কারণে খুন করেছে তা সে নিজেও জানে না।

নিহত অনিমা দাশ ঘোষনগর গ্রামের মৃত নিরাপদ দাশের মেয়ে। প্রায় ১৬ বছর পূর্বে দীপকের সাথে তার বিয়ে হয়। অনিমার ভাই মিঠু দাশ জানায়, তাদের দাম্পত্য জীবন সুখময় ছিলো। আকস্মিক তার দিদি ও ভাগ্নেকে খুনের ঘটনায় তারাও হতভম্ব। তবে পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলো দীপকের ভাই গোপালের স্ত্রী মিতা রাণী দাশ। তিনি পাশের ঘরে এতোবড় ঘটনা ঘটে গেলেও কিছুই জানেন না বলে জানান। তার ভাই গোপাল ওই সময় পাশের গ্রামে ধর্মীয় যজ্ঞ শুনতে গিয়েছিলেন বলে জানান।

সর্বশেষ খবর পেয়ে খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিউল্লা ও পাইকগাছা থানার ওসি (তদন্ত) কাজী কামাল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠান। ওসি (তদন্ত) কাজী জামাল জানান, হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দীপককে আটক করা হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে সে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।