জীবননগর উথুলীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির দু পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় আহত ৩ : দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলায় তিনজন আহত হয়েছেন। পূর্বশত্রুতার জের ধরে গতরাত সাড়ে দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। আহতরা হলেন- উথলী গ্রামের মজনু মিয়ার দু ছেলে বিএনপি সমর্থক এনামুল হক (২৬) ও নাজমুল হক (২৪) এবং মহসিন আলীর ছেলে আওয়ামী লীগ সমর্থক জুনাব আলী ওরফে জুনাদ (২৮)।

আহত সূত্রে জানা গেছে, গতরাতে উথলী গ্রামের আমতলা মোড়ের রহমানের চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন এনামুল হক। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর আক্রমণ চালায়। তাকে বাঁচাতে ছুটে আসে ভাই নাজমুল হক। এনামুল ও নাজমুলের শরীরে ধারালো অস্ত্রের কয়েকটি কোপ লাগে। খবর পেয়ে এনামুল পক্ষের লোকজন জড়ো হয়ে পাল্টা আক্রমণ চালায়। এ সময় তারা আওয়ামী লীগ সমর্থক জুনাব আলী ওরফে জুনাদকে কুপিয়ে জখম করে। রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন আহত তিনজনকেই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এনামুল ও জুনাদকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত ডা. রবিন জানিয়েছেন, এনামুল ও জুনাদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের কয়েকটি আঘাত রয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। দুজনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনী চিকিৎসা দিতে না পারলে তাদের জীবন সঙ্কটের মধ্যে পড়বে। তবে গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের চিকিৎসার জন্য রক্তের সন্ধান চলছিলো। রক্ত না পেলে ঢাকায় নেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আহতদের স্বজনরা। রাতেই চুয়াডাঙ্গা সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) কামরুজ্জামান হাসপাতালে আসেন। তিনি আহতদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শোনেন। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ চেষ্টা করছে বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই উথলী এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গুরুতর আহত দুজন মারা যেতে পারেন বলে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনার জের ধরে প্রতিশোধপরায়ণ উভয়পক্ষের মধ্যে আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়সূত্রে আরো জানা গেছে, রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যু ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিলো। এ বিরোধের জের ধরে চরম উত্তেজনাও চলছিলো। শেষ পর্যন্ত তা রক্তক্ষয়ী হামলা-পাল্টা হামলার রূপ নিল।

হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জীবননগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, পরবর্তীতে আর কোনো সহিংস ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য উথলীতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। থানায় কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ কিংবা মামলা করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলেই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a comment