মুজিবনগরে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক

আন্দোলনের হুমকিতে ভীত নয় সরকার

শেখ সফিউদ্দীন: উপজেলা নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের হুমকির বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, তারা আগাম বহুবার বহুকথা বলেছে। তাই যখন তারা আন্দোলন করবে তখন ঠিকই মোকাবেলা করা হবে। তাদের হুমকিতে ভীত নয় সরকার। চলমান বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়েই যুদ্ধপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা হবে। গতকাল শুক্রবার সকাল এগারটার দিকে মেহেরপুরের মুজিবনগর কমপ্লেক্সে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথাগুলো বলেন।

অপর এক প্রশ্লের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মুজিবনগর তথা মেহেরপুর জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি স্থলবন্দর ও রেললাইন স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সার্বিক উন্নয়নে বর্তমান সরকার চেষ্টা করছে। স্থলবন্দর স্থাপনের বিষয়ে প্রস্তুত বাংলাদেশ। চলছে ভারত সরকারের সাথে আলোচনা। দ্রুত ভারতের সাথে চুক্তি শেষ করে স্থলবন্দরর স্থাপনের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চেষ্টা করছে সরকার।

মুজিবনগর বাংলাদেশের অস্তিত্বের ঠিকানা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে মুজিবনগর কমপ্লেক্সে চলমান সব প্রকল্পের কাজ এ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে। জেলার মানুষের দাবিগুলো এবং চলমান প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে দুয়েক দিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে। কিভাবে দ্রুত সমাধান করা যায় সে বিষয়ে সুপারিশ করা হবে। জাতির কাছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরতেই আগামী ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসে এ আম্রকাননে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজনের প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত বলেও জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।

মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন দোদুলসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ মন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন দাবি দাওয়া উপস্থাপন করেন। এমপি ফরহাদ হোসেন বলেন, জেলার যোগাযোগ, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে চেষ্টা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই মেহেরপুরের উন্নয়ন সাধিত হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে ব্যাপক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বর্তমান সরকার। সে লক্ষ্যে দ্রুত বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে সকাল সাড়ে দশটার দিকে মন্ত্রী মুজিবনগর আম্রকানে পৌঁছে স্মৃতিসৌধে পুষ্পামাল্য অপর্ণ করেন। পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন- মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিয়াজান আলী, সহসভাপতি আসকার আলী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রসুল, জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমাম হোসেন মিলু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আয়ুব হোসেন, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মোল্লা, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান চাঁদুসহ নেতৃবৃন্দ।

সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন, পুলিশ সুপার একেএম নাহিদুল ইসলাম ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উল্লাহসহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

দুপুর সাড়ে বারটার দিকে মুজিবনগর থেকে মেহেরপুর সার্কিট হাউজের উদ্দেশে রওনা হন মন্ত্রী। সার্কিট হাউজে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সাক্ষাত ও মধ্যাহ্নভোজ শেষে স্থলপথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সরকারি সফরের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দিনগত মধ্যরাতে মেহেরপুরে পৌছান তিনি।